Friday, July 1, 2011

যৌনবিকৃতি

যৌনবিকৃতি বলতে এমনসব যৌনকর্ম-কাণ্ডের প্রতি আকর্ষণ এবং/অথবা এ সকল কর্মকাণ্ডের সংঘটন বোঝায় যেগুলো 'স্বাভাবিক' নয়। কোন্‌ কোন্‌ যৌনক্রিয়া স্বাভাবিক (বা অস্বাভাবিক) তা নির্ধারিত হয় তিনটি পর্যায়ে। এগুলো হলো (ক) ধর্ম, (খ) স্থানীয় আইন এবং (গ) সামাজিক রুচি। ধর্ম ব্যতীত বাকী দুটি নিয়ামক যেহেতু চলমান বা পরিবর্তশীল, তাই যৌনবিকৃতির সঙ্গার্থও পরম বা চূড়ান্ত নয়। যেমন, এক সময় সমকাম সকল দেশের আইনে অবৈধ ছিল ; কিন্তু ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি দেশে সমকাম একটি আইনসিদ্ধ যৌনক্রিয়া হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

বিভিন্ন প্রকার যৌনবিকৃতিমূলক কর্ম-কাণ্ড

মানুষ নানাপ্রকার যৌনবিকৃতিমূলক কর্ম-কাণ্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে এবং কোন কোন মানুষ ঐ সব কর্মকাণ্ডের প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করে। এ রূপ যৌনবিকৃতিমূলক কর্ম-কাণ্ডর সংখ্যা অনেক যার মধ্যে রয়েছে মুখমেহন, পায়ূমৈথুন, ধর্ষকাম, মর্ষকাম, অজাচার, পশ্বাচার, ধর্ষণ ইত্যাদি।


মুখমেহন

মুখ গহ্ববর দ্বারা বিপরীত লিঙ্গ বা সমলিঙ্গের যৌনাঙ্গ চোষন বা লেহন করে যে যৌনক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় তাকে মুখমেহন বলা হয়। এটা দু ধরনের: যখন পুরুষ সঙ্গীটি স্ত্রী সঙ্গীর যোনী লেহনপূর্বক পুর্ন যৌন পরিতৃপ্তি গ্রহণ করে তাকে 'কানিলিঙ্গা'স (Connillingus) বলা হয়। আবার স্ত্রী সঙ্গীটি পুরুষ সঙ্গীর লিঙ্গ চোষণপূর্বক পুর্ণ যৌন পরিতৃপ্তি গ্রহণ করলে তাকে 'ফেলাশিও' (Fellatio) বলা হয়। যুগলদের মধ্যে কানিলিঙ্গাস এবং ফেলাশিওই যখন চরম যৌন পরিতৃপ্তি লাভের একমাত্র ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন তা অস্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেক যুগল মূল রতিক্রিয়া বা মিলনের পূর্বে শৃঙ্গারের অংশ হিসেবে মুখমেহন করে থাকে। বাৎসায়ন তার কামসূত্রেমুখমেহনকে নিম্নবর্গীয় ব্যক্তির যৌনাচার হিসাবে নিরুৎসাহিত করেছেন।


পায়ূমৈথুন

মলদ্বার বা পায়ুপথ দিয়ে যৌনাক্রিয়া করাকে পায়ূমৈথুন বলা হয়। সচরাচর দুজন সমকামী পুরুষ পায়ূমৈথুনরে মাধ্যমে যৌনকামনা চরিতার্থ করে থাকে। তবে একজন পুরুষ একজন নারীর পায়ূপথে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করিয়েও পায়ূমৈথুনে প্রবৃত্ত হতে পারে। পায়ূপথ বা মলদ্বার যৌনাঙ্গ নয় ; অতএব পায়ূমৈথুনকে স্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবে গণ্য করা হয় না। যেসব দেশে সমকামীতার অনুমতি নেই সেখানে পায়ূমৈথুন একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্ত্রীর সাথে পায়ূমৈথুন করা ধর্মীয় ভাবে নিষিদ্ধ করা আছে। স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত এমন যৌনাচার শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং ধর্ষণ হিসেবে গণ্য। নাবিক, জেলখানার কয়েদী, প্রতিরক্ষাবাহিনী এবং ছাত্রাবাসে নারীবিবর্জ্জিত পরিবেশে পুরুষদের মধ্যে বিকল্প যৌনক্রিয়া হিসাবে পায়ূমৈথুন প্রচলিত। এমতরূপ ব্যভিচারের কারণে যৌনবাহিত রোগ (যেমন এইডস) খুব দ্রুত ছড়িয়ে পরে।


ধর্ষকাম

নিপীড়নমূলক যৌনক্রিয়ার মাধ্যমে অনেকে যৌনতৃপ্তি লাভ করে। এরূপ যৌনক্রিয়াকে বলা হয় ধর্ষকাম এবং যারা এভাবে যৌনানন্দ লাভে সক্ষম তাদের বলা হয় ধর্ষকামী।


মর্ষকাম

মর্ষকাম হলো ধর্ষকাম-এর ঠিক বিপরীত। এই ধরনের বিকৃত যৌনাচারে পুরুষ সঙ্গীটি স্ত্রী সঙ্গীটি দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তার পুর্নাঙ্গ যৌনতৃপ্তি লাভ করে। এজন্য পুরুষটি মহিলা সঙ্গীকে উলঙ্গ অবস্থায় তাকে আঘাত করার জন্য অনেক সময় বাধ্য করে। কোনো কোনো মহিলাও এমন বিকৃত রুচির যৌনাচারে অভ্যস্ত হতে পারে। এ ধরনের প্রবণতা মানসিক বৈকল্যের লক্ষণ।


ধর্ষণ

সঙ্গী বা সঙ্গিনীর ইচ্ছার বিরূদ্ধে বা সম্মতিবতিরেকে বলপ্রয়োগপূর্ব্বক যৌনক্রিয়াকে বলে ধর্ষণ বা বলাৎকার। কিছু কিছু মানুষ প্রধানত ধর্ষণের মাধ্যমে যৌনানন্দ লাভ করে। ধর্ষণ একটি ফৌজদারী অপরাধ। সাধারণভাবে আইনে পুরুষ কর্তৃক নারীকে ধর্ষণের বর্ণনা পাওয়া যায় অর্থাৎ নারী কর্তৃক পুরুষকে ধর্ষণ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বর্ণিত নেই।


অজাচার

আপন রক্তসূত্রীয় আত্মীয়-স্বজন যাদের সাথে সামাজিক বা ধর্মীয় ভাবে বিবাহ নিষিদ্ধ তাদের সাথে যৌনাচার করাকে অজাচার বলা হয়। আপন মা, বাবা, ভাই, বোন, মামা, চাচা, খালা, ফুফু, নানা, দাদা, নানী, দাদী, ভাগ্না, ভাগ্নি, ভাতিজা, ভাতিজি, সৎ ভাই বোন, সৎ মা-বাবা (হিন্দু ও খৃষ্ট ধর্মে আপন চাচাতো / মামাতো ভাইবোন) এদের সাথে বিবাহ ধর্মীয় ভাবে নিষিদ্ধ, এদের সাথে যে কোনো অবস্থায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনই অজাচার হিসেবে গণ্য হয়।


পশ্বাচার

পশু-পাখির সাথে মানুষের যৌনাচারকে পশ্বাচার বলে। এটা একধরনের অস্বাভাবিক এবং বিকৃত যৌনাচার বলে গণ্য হয়। এই ধরনের লোকগুলো নিসঙ্গতার কারণে একধরনের মানসিক ব্যধিতে ভোগে যার ফলে এ ধরনের বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হয়। সাধারণত রাখাল শ্রেণীর পেশাজীবিদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশী থাকতে দেখা যায়। গরু-বাছুর, ছাগল, ঘোড়া, গাধা, শূকর, হাঁস, রাজহাস, মুরগি থেকে শুরু করে অন্য পশুপাখীদের সাথেও এমন কাজ করার ঘটনা ঘটতে পারে।


যৌনবিকৃতির কারণসূত্র


সাহিত্যে যৌনবিকৃতির প্রতিফলন

মোদক সাহিত্যে (পনোর্গ্রাফি) নানারূপ যৌনবিকৃতমূলক আচরণ দেখতে পাওয়া যায়। গত একশত বৎসরে মোদক সাহিত্যে নানাবিধ যৌনবিকৃতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন পায়ূমৈথুনের কথা বলা যায়। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে নারী-পুরুষের পায়ূমৈথুন মোদক সাহিত্য রচয়িতাদের নিকট প্রিয় একটি যৌনাচারে পরিণত হয়েছে।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More