Thursday, July 7, 2011

নারীর যোনির কর্মতৎপরতা


নারীর জননেন্দ্রিয়ের বহিঃস্থ অংশগুলোর নাম হল ভগাঙ্কুর বা ক্লাইটোরিস এবং ল্যাবিয়া অর্থাৎ ভগের ওষ্ঠ যা একত্রিত করলে নাম হয় ভালভা বা স্ত্রী যোনি দ্বার। নারীর যোনির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ হল দুটি ওষ্ঠ বা ল্যাবিয়া। বহিঃস্থ এবং বৃহত্তর ল্যাবিয়া মেজেরো ওষ্ঠটির মধ্যে আছে স্থূল চর্মের আবরণ যা অন্যান্য অংশকে সুরক্ষিত করে রাখে। ওষ্ঠ দুটি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এসে পেরিনিয়ামের যোনিমুখ এবং পায়ুর মধ্যবর্তী ত্বক মূলে গিয়ে মিশে যায়। উপরে বাইরের দিকে বহিঃস্থ ওষ্ঠটি মিশে যায় চর্বিযুক্তি কলার প্যাডের সঙ্গে যেখানে যৌনকেশ এবং ত্বক থাকে। এই প্যাডটি নরম মাংসল অংশ আবৃত করে রাখে পিউবিক হাড়ের সঙ্গে, যাকে চলিত কথায় বলা হয় মাউন্ট অফ ভিনাস। ল্যাবিয়া মেজোরা অর্থাৎ বৃহদোষ্ঠের নিচে থাকে ল্যাবিয়া মাইনোরা অর্থাৎ ক্ষুদ্রোষ্ঠ। শীর্ষ দেশে যোনির বৃহদোষ্ঠ বা ল্যাবিয়া মেজোরা ও ক্ষুদ্রোষ্ঠ বা ল্যাবিয়া মাইনোরা যুগ্ম অবস্থায় থাকে, দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে ঘিরে রাখে। এ ওষ্ঠ দুটি মূত্রনালীর মুখকেও সুরক্ষিত করে। ক্ষুদ্রোষ্ঠের মধ্যবর্তী এলাকাকে বলা হয় ভেস্টিবিউল। যৌনক্রিয়ার আগে সাধারণত এ অংশটি ঢাকা থাকে সতীচ্ছদ দ্বারা। এর আকার, আকৃতি এবং দৃঢ়তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের হয়। ভেস্টিবিউল চারপাশে নখের মতো ত্বক থাকে অনেক নারীর, যেগুলো হলো সতীচ্ছদের ছিন্ন অংশ, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় কারুণকলি মারটিফর্মস। পেছনের দিকে ক্ষুদ্রোষ্ঠটি যুক্ত হয়ে একটা পাতলা আবরণের সৃষ্টি করে যা ছিন্ন হয় প্রথম সন্তানের জন্মের সময়। নারীর ভগাঙ্কুর লিঙ্গের সমধর্মী প্রায়, এমনকি এর ভগাষ্ঠের আচ্ছাদন পর্যন্ত আছে। এটা মুখ্যত নারী যৌনাঙ্গের সবচেয়ে সপর্শকাতর  ও যৌন উত্তেজক অঙ্গ। উত্তেজিত হলে এর সপঞ্জের মতো জালিকা বা কলাগুলো রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে খাড়া হয়ে ওঠে। উত্থিত ভগাঙ্কুরে পুরুষাঙ্গ কিংবা হাতের আঙ্গুল বা ক্রমাগত স্পর্শজনিত ঘর্ষণের ফলে নারী সহজে ও দ্রুততর যৌন উত্তেজনার চরমে উঠে যায় এবং অনেক সময় নারীর রাগমোচনও হয়ে যায়। যোনির অন্যান্য অংশও যৌন উত্তেজনায় দারুণভাবে সাড়া দেয়। ভগোষ্ঠের মধ্যে উত্থিত হতে পারে এমন জালিকা থাকে, যা দেহমিলনের সময় বড় হয়ে যায় এবং বার্থোলিন গ্রন্থি সক্রিয় হয়ে ওঠে। নারীর যোনির সঙ্গে দুই জোড়া গ্রন্থির সম্পর্ক আছে। প্রথমটি হলো স্কেনের গ্রন্থি যা ঠিক ভগাঙ্কুরের নিচে অবস্থিত এবং ক্ষারধর্মী এক রস নির্গত করে যা যোনির স্বাভাবিক অম্লত্বকে কমিয়ে দেয়। অপর বৃহত্তর জোড়াটি থাকে কর্ণদর্ভটের নিচে। এর নাম হলো বার্থোলিন গ্রন্থি। নারী যৌন উত্তেজিত হলে এ বার্থোলিনগ্রন্থি থেকে কামরস নির্গত হয়, যার ফলে যোনিপথ পিচ্ছিল হয়ে গিয়ে লিঙ্গকে যোনি অভ্যন্তরে অবাধে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। এ গ্রন্থিগুলো ছোলার আকারের মতো এবং সহজেই এখানে যৌনরোগ সংক্রমিত হতে পারে। রোগগ্রস্ত হলে এ গ্রন্থি লাল হয়ে যায় এবং নরম হয়। এ রোগটিকে বলে বার্থোলিনাইটিস। এন্টিবায়োটিক ওষুধ হলো এ রোগের চিকিৎসা, কখনো কখনো এখানে পুঁজ জমে ফোঁড়া হয়। সেক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। নারীর যৌনভাব জাগ্রত হলে জননেন্দ্রিয়ের অঙ্গগুলো বিশেষ করে ক্ষুদ্র ভগোষ্ঠ এবং স্ত্রী যোনির নিম্নাংশে রক্ত সঞ্চারিত হয় এবং নারী যোনিতে যথেষ্ট ক্ষরণ দেখা যায়। অর্গাজম বা রাগ মোচনের সময় শ্রোণীর পেশিগুলো সে সঙ্গে যোনির চারপাশের পেশিগুলো সংকুচিত হয়। যদি কোনো নারী যৌনমিলনের সময় বিশেষ করে উত্তেজিত বা উদ্বিগ্ন থাকে তবে যোনির চারপাশের পেশিগুলোতে অনৈচ্ছিক আক্ষেপ হয়। এর ফলে যোনির দ্বার সংকুচিত হয়ে গিয়ে যৌনমিলনকে কষ্টদায়ক করে থলিগুলো পরিণত হয়ে ওঠে এবং ডিম্বাণুও পরিণত হয়ে ওঠে তখন ক্ষুদ্রথলির অগ্রভাগস্থ কোষগুলো ডিম্বাণুকে বির্গত হতে দেয়। ঠিক কিভাবে এটা হয় তা আজও রহস্যাবৃত। তারপর ডিম্বাণু ফ্যালোপিয়ান টিউবের মুখ থেকে নির্গত হয়। ডিম্বাণু সৃষ্টির ব্যাপারে ডিম্বাশয়ের ভূমিকাতে হরমোন গ্রন্থিরও ভূমিকা থাকে। মস্তিষেকর তলদেশে অবস্থিত পিটুইটারি গ্রন্থির দ্বারা নিয়মিত হয় ডিম্বাশয়ের কার্যকলাপ।
পিটুইটারি প্রথমে তৈরি করে এক ধরনের হরমোন, যাকে বলা হয় ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন বা এফএসএইচ যা রক্তেস্রোতের মধ্য দিয়ে ডিম্বাশয়ে প্রবেশ করে। এ হরমোন এফএসএইচ সাহায্য করে ফলিকল এবং ডিম্বাণুকে বিকশিত করার ব্যাপারে, সেই সঙ্গে এস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে জরায়ুর আস্তরণকে মোটা হতে সাহায্য করে যাতে তা সমৃদ্ধ ডিম্বাণুকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকে।
এস্ট্রোজেন দেহের প্রোটিনকে গড়ে তুলতে এবং তরল বস্তুর প্রবাহকে ধরে রাখার ব্যাপারেও সাহায্য করে। ফলিকল অর্থাৎ ক্ষুদ্র থলিটি সম্পূর্ণ পরিণত হয়ে ওঠার পর ফেটে যায়, তখন অপর একটি পিটুইটারি হরমোন লুটেনাইজিং হরমোন বা এলএইচ তার কাজ করা শুরু করে এবং খালি ক্ষুদ্র থলির মধ্যে কারপাস লিওটিয়ামের বিকাশ ঘটায়। এই পদার্থটির কাজ হলো গর্ভ সঞ্চার করা, পক্ষান্তরে এ পদার্থ তার নিজস্ব হরমোন, প্রজেস্টেরন তৈরি এবং নিঃসরণ করে, যদি ডিম্বাণু পনেরো দিনের মধ্যে উর্বর না হয়ে ওঠে তবে করপাস লিউটিয়াম অংশটি সংকুচিত হয়ে যায় এবং প্রজেস্টেরোন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এবং জরায়ুর আস্তরণ ঝরে পড়ে মাসিক রক্তস্রাবরূপে। তখন আবার ফলিকল স্টিমুলিটিং হরমোন উৎপাদন আরম্ভ হয় এবং চক্রের পুণরাবৃত্তি হতে শুরু করে। অবশ্য যদি ডিম্বাণুটিতে প্রাণ সঞ্চারিত হয়ে যায় তবে ঐ করপাস লিউটিয়াম অংশটি কাজ করতে শুরু করে, যতক্ষণ না পর্যন্ত গর্ভফুল তৈরি হয় এবং রক্তস্রাব বন্ধ হয়।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More