Sunday, July 24, 2011

পুরুষের যৌন শরীরতত্ত্ব



পুরুষের যৌন শারীরতত্ত্বঃ পুরুষের বহিরাগত যৌনাঙ্গ ও তার গঠন
শিশ্ন (Penis)
বহুবিধ কারণবশত শিশ্নের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন-
  • এটা হচ্ছে সর্বাপেক্ষা অপরিহার্য যৌনাঙ্গ। কারণ এটা শরীরের মধ্যে থেকে বাইরের দিকে প্রসারিত।
  • এটাতে প্রায়ই হাত লাগানো হয়। প্রত্যেকবার একটি শিশু বা পুরুষ মানুষ প্রস্রাব করে সে তার শিশ্নকে ধরে। শিশ্নই হচ্ছে সেই অর্গান যার মধ্য দিয়ে আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলের প্রস্রাব শরীর থেকে নির্গত হয়।
  • শিশ্নই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা যৌন সপর্শকাতর অঙ্গ যা বালক ও পুরুষ মানুষের মধ্যে অবস্থিত। যৌন উত্তেজনার প্রথম মুহূর্ত থেকে শিশ্নটি বড় এবং শক্ত হতে থাকে এবং খাড়া হয়ে যায়।
উত্তেজনার চূড়ান্ত পর্যায়ে বয়স্ক ও পূর্ণ যৌবনপ্রাপ্ত মানুষের শিশ্ন থেকে এক প্রকার তরল পদার্থ বেগে প্রবাহিত হয়ে বেরিয়ে আসে।

শিশ্নের দুটো অংশ আছে একটি Shaft অন্যটি glans। স্যাফট হচ্ছে শিশ্নের বৃহত্তর অংশ। এর গঠন একটি নালী বা টিউবের মতো। এর একপ্রান্ত শরীরের সাথে যুক্ত; তার শেষ প্রান্তে রয়েছে গ্ল্যান্স। অনেক সময় এটাকে শিশ্নের মাথা, টি বা কলি বলা হয়ে থাকে। গ্ল্যান্স তৈরি হয়ে থাকে স্যাফটের চেয়ে খুব নরম মাংসল পেশি বা কলা দ্বারা। এটি অত্যন্ত সপর্শকাতর এবং হতে পারে এটি যৌন আনন্দের উৎস। এটাকে নারীর ভগাঙ্কুরের সাথে তুলনা করা চলে। এর মাথায় গিয়ে একটি ছোট ছিদ্র আছে তাকে প্রস্রাবের নালী বা ইউরেথ্রাল পেনিং বলা হয়। এই ছিদ্রের মধ্য দিয়ে পুরুষ মানুষের প্রস্রাব ও বীর্য বেরিয়ে আসে। ত্বকের সপর্শকাতর সীমানা গ্ল্যান্সের নিচের অংশে বেশি থাকে যার সামনের অংশের নাম হচ্ছে ফ্রেনুলাম।
জন্মের পর থেকে শিশ্নের মাথায় একটি ছোট টিউবের মতো ঢিলা চামড়া থাকে যাকে বলা হয় ফোরস্কিন, যা গ্ল্যান্সের মাথাটা ঢেকে রাখে। অগ্রভাগের ঝুলন্ত চামড়া গ্ল্যান্সকে সুরক্ষিত রাখে। জন্মের পর পরই অনেক বালকের ফোরস্কিন কেটে ফেলা হয়। এই ঝুলন্ত চামড়া কেটে ফেলার প্রক্রিয়াকে বলা হয় খতনা বা সারকামসিশন। একটি শিশ্ন যাতে ফোরস্কিন থাকে না তাকে বলা হয় খতনাকৃত শিশ্ন এবং যাদের খতনা করা হয় না তাদের বলা হয় অখতনাকৃত শিশ্ন।
এই শতাব্দীর শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খতনা করানো খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল একটি ভুল প্রচেষ্টার মাধ্যমে বালকের মধ্যে হস্তমৈথুন কম করে আনার জন্য। ধর্মীয় এবং সংস্কৃতিগত বিশ্বাস এবং স্বাস্থ্যগত কারণে পিতা-মাতারা এখন তাদের ছেলেদের খতনা করিয়ে থাকেন। খতনা করানোর অন্যান্য সাধারণ কারণ হচ্ছে যে, পিতা চান যে ছেলেরা দেখতে ঠিক তার মতোই হোক। শিশ্নের অগ্রভাগের আলগা চামড়াকে টেনে তুলে অতি সহজেই প্রস্রাব করা যায় এবং সেটাকে পরিষকার পরিচ্ছন্ন রাখা যায়। আলগা চামড়ার অন্তর্দেশকে পরিষকার রাখা খুবই দরকারি। অন্যথায় তার মধ্যে Smegma জন্মে। স্মেগমা হচ্ছে একপ্রকার শক্ত লেগে থাকা সাদা পদার্থ, প্রায় যাতে একটা অপ্রীতিকর দুর্গ হয়ে থাকে। এটা তৈরি হয়ে থাকে শরীর থেকে নিঃসৃত তৈলাক্ত পদার্থের সাথে ব্যাকটেরিয়া মিশে। ব্যাকটেরিয়াগুলো ওই তৈলাক্ত পদার্থগুলো খেয়ে বেঁচে থাকে। গ্ল্যান্স ও শিশ্নের স্যাফট পরিষকার পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই জরুরি।
শিশ্নের মধ্যের অংশটা তৈরি হয়ে থাকে ইউরেথ্রা এবং দুটো টিস্যুর সংমিশ্রণে, যাকে বলা হয়ে থাকে Corpus Spongiosum এবং Corpus Cavernosa. শিশ্নের মধ্যস্থিত ইউরেথ্রা একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বহুমুখী কাঠামো। এটাকে শিশ্নের প্রস্রাব করা ও বীর্যপাত ঘটানো এই দুটো কাজের জন্যই প্রয়োজন হয়। এটা একটি দীর্ঘ টিউব বা মূত্রথলি থেকে শুরু হয়ে শিশ্নের মধ্য দিয়ে চলে এসে প্রস্রাবের নালীর মুখ পর্যন্ত মিশেছে। প্রস্রাবের সময় মূত্রথলি থেকে বের হয়ে ইউরেথ্রার মধ্য দিয়ে এসে বাইরে নির্গত হয়। পুরুষের ইউরেথ্রাটির সংযোগ রয়েছে জন্মদান পদ্ধতির সাথেও। এটা শিশ্নের মধ্য দিয়ে পুরুষের বীর্য বহন করে। শিশ্নের মধ্য থেকে বীর্য বা সিমেন ধাক্কা দিয়ে চলে আসা এবং বের হওয়াকে বলা হয় বীর্যপাত বা ইজাকুলেশন।
শিশ্নের স্যাফটটি তৈরি হয় একপ্রকার টিস্যু দ্বারা। যাকে বলা হয় Corpus Spongiosum এবং Corpus Cavernosa. এই টিস্যুগুলোর দ্বারা গর্ত এবং সপঞ্জি এরিয়া গঠিত হয়। সাধারণত এসব টিস্যুর মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল করে। রক্ত চলাচল করে গর্তের চারপাশ দিয়ে ও সপঞ্জি এরিয়ার মধ্য দিয়ে ও যা সব সময় খালি থাকে। যৌন উত্তেজনার সময়, যাই হোক, সূক্ষ্ম পেশিগুলো শিথিল হয়ে খুলে যায় এবং গর্তের ও সপঞ্জি এরিয়ার চতুর্দিকে রক্তের প্রবাহ ও চাপ বেড়ে যায়। যেহেতু এই টিস্যুগুলো রক্তে পূর্ণ হয়ে যায়, সে কারণে শিশ্নটি শক্ত ও স্ফীত হয়ে ওঠে। শিশ্নের এই স্ফীত অবস্থাকে বলা হয় tumescent of the penis বা শিশ্নের স্ফীত অবস্থা। এটা অনেক দীর্ঘ ও মোটা হয়ে যায় এবং কম নমনীয় বেশি শক্ত অবস্থায় আসে। এটাকে ‘ইরেকশন’ বা খাড়া অবস্থা বলা হয়ে থাকে। যখন যৌন উত্তেজনা শেষ হয়ে যায় তখন শূন্যগর্তের পেশিগুলো নিস্তেজ হয়ে এসে রক্তের প্রবাহ কমে যায়। এ সময়ে ইরেকশন থাকে না এবং শিশ্ন নরম হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
বালক ও পুরুষেরা অনেক সময় তাদের শিশ্নের গঠন ও আকার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগে। পেনিসের কোনো স্ট্যান্ডার্ড বা আদর্শ আকার নেই বা লম্বা চওড়ারও কোনো সীমারেখা নেই। অনেকগুলো হয়ে থাকে মোটা এবং খাটো। আবার অনেকগুলো হয়ে থাকে চিকন ও লম্বা। পেনিস বড় হলেই তা ভালো পেনিস হয় এর মধ্যে কোনো সত্য নেই। যৌনকর্ম ও সন্তান জন্মদানের বিষয়ে শিশ্নের সাইজের কোনো ভূমিকা নেই। এটা সত্য যে অনেক লোক পছন্দ করে যে তাদের সঙ্গীর বিশেষ আকারের শিশ্ন থাকুক। শিশ্নের আকারকে তুলনা করা যেতে পারে মানুষের উচ্চতার পছন্দের সাথে। পৃথিবীতে অনেক মানুষ এরকম আছে যারা লম্বা অথবা বেঁটে প্রেমিকদের পছন্দ করে।
অণ্ডকোষ
অন্য বহিরাঙ্গের যৌনাঙ্গকে বলা হয় স্ক্রোটাম বা অণ্ডকোষ। যে থলেটি শিশ্নের নিচে ঝুলে থাকে সেটাই হচ্ছে অণ্ডকোষ। অণ্ডকোষের মধ্যে কতগুলো অভ্যন্তরীণ জন্মদানকারী অঙ্গ থাকে। তার মধ্যে রয়েছে দুটি গোল বলের মতো গ্ল্যান্ড বা মাংসগ্রন্থি। তাদের বলা হয় ‘টেস্টিজ’ এবং তারা শুক্রকীট তৈরি করে। অণ্ডকোষের অন্যতম কর্তব্য হচ্ছে টেস্টিজকে সুরক্ষা করা। টেস্টিজের অন্য নাম হচ্ছে টেস্টিকলস। অণ্ডকোষ তার চেহারা বদলায়। অনেক সময় তা ঢিলে হয়ে শরীর থেকে অনেক নিচে ঝুলতে থাকে। অন্য সময়ে অণ্ডকোষ আকারে ছোট হয়ে শরীরের সাথে মিশে থাকে। শরীরে শুক্রকীট তৈরি করার জন্য এই পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। টেস্টিজের মধ্যে তখনই শুক্রকীট জন্ম নেয় তার তাপমাত্রা যখন শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে কয়েক ডিগ্রি কম থাকে। অণ্ডকোষ টেস্টিজ দুটোকে ধরে রাখে শরীরের অনেক নিচে এই শীতলতর তাপমাত্রা রক্ষার জন্য। গ্রীষ্মের দিনে অণ্ডকোষ অনেক বড় হয় এবং টেস্টিজ দুটো গরম শরীর থেকে অনেক নিচে ঝুলতে থাকে। শীতের দিনে অথবা ঠাণ্ডা পানি দ্বারা গোসল করার পর অথবা সাঁতার কাটার পর অণ্ডকোষ ঘুঁচে গিয়ে শরীরের সাথে মিশে এবং শরীরের তাপমাত্রা গ্রহণ করে।
একটি পেশি যার নাম হচ্ছে ‘ক্রিমাস্টার পেশি’ অণ্ডকোষের সাথে জড়িত থাকে। এটা দ্বারা টেস্টিজকে শরীরের কাছে বা দূরে রাখার কাজটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। ক্রিমাস্টার পেশি ও স্ক্রোটামকে ঢিলে এবং টাইট করে যখন একজন পুরুষের উরুর ভেতরের দিকটি সপর্শ করা হয়। ক্রিমাস্টার পেশি অনিচ্ছাকৃতভাবে কাজ করে। বালক এবং পুরুষদের-এর উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এই পেশির তাপের সাথে বা সপর্শের সাথে যে প্রতিক্রিয়া হয় তাকে বলা হয় ‘ক্রিমাস্টার রিফ্লেক্স’। অনেকে দেখতে পান যে, তাদের অণ্ডকোষ একদিকে হেলানো। এটা সাধারণত দেখা যায় যে, স্ক্রোটামের দুটো গোলকের একটি অন্যটির চেয়ে বেশি ঝুলানো। দুটো গোলক একই ঝুলে অবস্থান করাটাও স্বাভাবিক।
নিজে নিজের বাইরের যৌন অঙ্গগুলোকে মাসে একবার ভালো করে পরীক্ষা করে দেখা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এজন্য ডাক্তারি পরামর্শের জন্য এগিয়ে যাওয়া উচিত যদি কখনো পেনিসে বা অণ্ডকোষের উপর কোনো, দাগ, ফোলা বা ফোঁড়া দেখা যায়।
পুরুষের অভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ এবং জন্মদানের অঙ্গসমূহ এবং শুক্রকীট তৈরি
শিশ্ন এবং অণ্ডকোষ অভ্যন্তরীণ জন্মদানকারী অঙ্গসমূহের ও কাঠামোর সাথে সংযোজিত। অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহ ও কাঠামোগুলো শুক্রকীট তৈরির ও পরিচালনা করার জন্য দায়ী। শুক্রকীট হচ্ছে পুরুষের মধ্যে জন্মদানকারী কোষসমূহ। দুটো জন্মদানকারী কোষের অথবা জননকোষের প্রয়োজন একত্রিত হয়ে একটি নতুন মানুষ তৈরির জটিল প্রক্রিয়ার পথে অগ্রসর হওয়া। একটি কোষ আসতে হবে পুরুষের কাছ থেকে এবং অন্য একটি কোষ আসতে হবে নারীর কাছ থেকে। যখন একটি শুক্রকীট নারীর প্রজনন সেল বা ডিম্বের সাথে মিলিত হয় তারা একত্রে মিশে যায়। এটাকে বলা হয় ফার্টালাইজেশন বা উর্বরতা।
অণ্ডকোষের বিচি বা টেস্টিজ
টেস্টিজ হচ্ছে দুটো বলের মতো মাংসগ্রন্থি যা অণ্ডকোষের মধ্যে থাকে। প্রত্যেকটি টেস্টিজের মধ্যে একপ্রকার পাতলা টিউবের জালি আছে যার দৈর্ঘ্য ৭৫০ ফুট। এই টিউবগুলো শক্তভাবে প্যাঁচানো। তাদেরকে বলা হয় Seminiferous tubules. এই টিউবগুলোর মধ্যে শুক্রকীটের জন্ম হয়। শুক্রকীট বা সপার্ম তৈরির এই পদ্ধতিকে বলা হয় Spermatogenesis. পুরুষের শরীরের মধ্যে যৌবনকাল থেকে শুরু করে সারাটা জীবন শুক্রকীট তৈরি হতে থাকে। প্রত্যেক মিনিটে মিনিটে শুক্রকীট তৈরি হয়। এর সরবরাহ কখনো শেষ হয় না। বীর্যবাহক টিউবগুলোর মধ্যে কোষ আছে যা পুরুষ সেক্স হরমোন তৈরি করে। হরমোন হচ্ছে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা আমাদের শরীরের পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে। হরমোন শরীরের গ্রন্থি ও অঙ্গের কাজকেও নির্দেশনা দেয় বা পরিচালিত করে। যদি বেশি সংখ্যায় একটি হরমোনের উপস্থিতি থাকে এবং তা একটি পুরুষের শরীরে নারীর শরীরের চেয়ে অত্যধিক বেশি প্রয়োজনীয় প্রজননের জন্য হয়, এটাকে তখন শ্রেণীভেদ করা হয় পুরুষ সেক্স হরমোন হিসেবে। মেল বা পুরুষ সেক্স হরমোনের অন্য নাম হচ্ছে androgen. Testosterone হচ্ছে মেজর এন্ড্রোজেন, যা শুক্রকীট তৈরিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে।
ইপিডিডাইমিস
প্রত্যেকটি টেস্টিজের উপরে অন্য একটি অতিশয় প্যাঁচানো টিউব আছে। এই টিউবটিকে বলা হয় ইপিডিডাইমিস। যখন শুক্রকীট প্রায় যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে ওঠে তারা তখন প্রত্যেকটি ইপিডিডাইমিসের মধ্যে চলে আসে। এখানে এসে শুক্রকীট বড় হয় এবং সাঁতার কাটার সামর্থ্য অর্জন করে। পরিপক্ক শুক্রকীটগুলো ইপিডিডাইমিসের মধ্যে অবস্থান করে যতক্ষণ পর্যন্ত না চরম যৌনপুলক শিউরনের মাধ্যমে তাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়। এটাকেই ইজাকুলেশন বা বীর্যপাত বলা হয়। এই পদ্ধতিকে আরো বলা হয়ে থাকে ‘ইমিশন’। এই মুহূর্তে এসে বালক ও পূর্ণবয়স্ক মানুষ চরম যৌনপুলক বা অর্গাজম লাভ করে। এটা হচ্ছে একটি অত্যন্ত আনন্দদায়ক অনুভব যা সমস্ত শরীরের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। অর্গাজম বা চরমপুলক হচ্ছে একটি অপ্রতিরোধ্য উত্তেজনার নির্গমন যা যৌন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে তৈরি হয়ে থাকে। এটা যৌন খেলার সময়ও হতে পারে যেমন হস্তমৈথুন বা যৌনমিলন বা জননেন্দ্রিয় বিষয়ক কল্পিত যৌন উত্তেজনার সময়। চরমপুলক সব সময়েই বীর্যপাতের মাধ্যমে হয় না এবং বীর্যপাতও সব সময় চরমপুলকের মাধ্যমে হয় না।
ভাস ডিফারেন্স বা অণ্ডকোষের নিঃসরণস্থল
পাকাপোক্ত শুক্রকীটগুলো প্রত্যেকটি ইপিডিডাইমিস থেকে বের করে দেয়া হয় একটি পাতলা দীর্ঘ টিউবের মধ্যে, যাকে বলা হয় ভাসডিফারেন্স। ভাজ ডিফারেন্স ইপিডিডাইমিসকে সংযোগ করে দেয় সেমিনাল ভেসিকেলের সাথে। এটা শুক্রকীটকে চালিত করে সেমিনাল ভেসিকেলের মধ্যে নিয়ে যায় সংকোচন এবং ধাক্কার মাধ্যমে ঠেলে দিয়ে।
সেমিনাল ভেসিকেলস
সেমিনাল ভেসিকেল হচ্ছে ছোট দুটো অর্গান যা মূত্রথলির নিচে অবস্থিত। এখানে এসে শুক্রকীটগুলো একটি তরল পদার্থের সাথে মিশ্রিত হয়, যাকে বলা হয় সেমিনাল ফ্লুইড বা বীর্যের তরল পদার্থ। এই তরল পদার্থ শুক্রকীটগুলোকে চলাচলের জন্য অনেক বেশি জায়গা করে দেয় এবং তাদের শুশ্রূষারও কাজ করে।
প্রোস্টেড গ্ল্যান্ড
শুক্রকীটের ভ্রমণের জন্য প্রোস্টেড হচ্ছে পরবর্তী প্রয়োজনীয় স্থান। প্রোস্টেড গ্রন্থি মূত্রথলির নিচে অবস্থিত এবং অত্যন্ত সপর্শকাতর। অনেক পুরুষই এটাকে উত্তেজিত হওয়া পছন্দ করে যৌনখেলার সময়। যখন শুক্রকীটগুলো বীর্যরসের সাথে মিশে যায় এবং প্রোস্টেড পর্যন্ত চলে আসে অন্য একটি পদার্থ এই মিক্সারের সাথে যোগ হয়। প্রোস্টেড এক ধরনের পাতলা দুধের মতো রস ইউরেথ্রার মধ্যে ঢেলে দেয় বীর্য ক্ষরণের সময়। সেই পদার্থটি শুক্রকীটকে এমন একটি পরিবেশ দেয় যার মধ্যে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে সাঁতার কাটতে পারে।
প্রোস্টেড গ্ল্যান্ডের নিচে একটি পেশি আছে যা বীর্যপাতের পূর্ব পর্যন্ত শুক্রকীটকে ইউরেথ্রার বাইরে ধরে রাখে। বীর্যপাত শুরু হওয়ার সাথে সাথে শুক্রকীটগুলো ইউরেথ্রার মধ্য দিয়ে চলতে শুরু করে এবং শিশ্নের মধ্যে দিয়ে শরীরের বাইরে চলে আসে।
কাউপারস গ্ল্যান্ডস
দুটো কাউপারস গ্ল্যান্ডস অবস্থিত ঠিক প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের নিচে। যখন শুক্রকীটগুলো যাত্রার জন্য অপেক্ষমাণ তখন তাদের ভ্রমণ সহজতর করার জন্য একটি ঘটনা ঘটে যায়। কাউপার গ্ল্যান্ড ইউরেথ্রার সাথে মিলিত থাকে। বীর্যপাতের পূর্বেই কাউপার গ্ল্যান্ড থেকে এক প্রকার তরল পদার্থ নিঃসৃত হয় যা ইউরেথ্রার পথকে পিচ্ছিল করে দেয় এবং পেনিসের পথকে শুক্রকীটের ভ্রমণের জন্য আরো আনন্দময় ও স্বাচ্ছন্দ্য করে তোলে।
যদি বিগত বীর্যপাতের সময়কার কোনো শুক্রকীট ইউরেথ্রার মধ্যে থেকে থাকে তারা কাউপার রসের সাথে মিশে যায়। এর অর্থ হচ্ছে যে, বীর্যপাতের পূর্বেও শুক্রকীটগুলো শিশ্নের মধ্য থেকে সাঁতার কেটে বেরিয়ে আসতে পারে। এই রসকে অনেক সময় বীর্যপাতপূর্ব রস বা তরল পদার্থ বা ‘পার ইজাকুলেট লুব্রিক্যান্ট’ বলা হয়ে থাকে। বীর্যরস ক্ষরণ তখনই হয় যখন প্রোস্টেট পেশি খুলে যায় এবং প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বীর্যরসকে পাম্প করে ইউরেথ্রার মধ্যে ঠেলে দেয়। তারপর ইউরেথ্রার পথ পেয়ে বীর্যরস শিশ্নের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে। যখন চূড়ান্ত মিক্সার শরীরের বাইরে এসে যায় তখনই তাকে বীর্য বলা হয়।
অনেক লোক দুশ্চিন্তা করে যে তারা বীর্যপাতের পরিবর্তে প্রস্রাব করতে পারে। এটা অসম্ভব। শিশ্ন যখন খাড়া হয় একটি পেশি মূত্রথলিকে ব করে দেয়, সুতরাং ইউরেথ্রার মধ্য দিয়ে কোনো প্রস্রাব আসতে পারে না। প্রস্রাবের সাথে বীর্যরস মিশে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। কারণ প্রস্রাবের সময় প্রোস্টেট ব হয়ে যায়, যার কারণে ইউরেথ্রার মধ্যে বীর্যরস প্রবেশ করতে পারে না, শুধু প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে। যদি এই সমস্ত পেশি সঠিকভাবে কাজ না করে তবে বীর্যরস মূত্রথলির মধ্যে চলে যেতে পারে-শরীরের বাইরে আসবে না। এটাকে বলা হয়ে থাকে retrograde ejaculation. এটা খুব বেশি একটা হয় না। এটা ওইসব পুরুষ লোকের হতে পারে যাদের প্রোস্টেড সার্জারি করা হয়েছে অথবা যাদের রয়েছে ডায়াবেটিস অথবা মাল্টিপল স্কেলেরোসিস। যেসব পুরুষের retrograde ejaculation. আছে তৎসত্ত্বেও তারা যৌন সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে ও পূর্ণভাবে চরম যৌন উত্তেজনা উপভোগ করতে পারে।

অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
এমবিবিএস এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি
http://www.sunagro.info

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More