Friday, July 15, 2011

আমাদের যৌন অনুভব- যৌনাঙ্গের মনস্তাত্ত্বিকতা


যৌনাঙ্গ পরিচালনা
আমার সব ধরনের যৌন অনুভব সৃষ্টি হয় আমাদের মস্তিষেকর মধ্যে, যা হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় যৌনাঙ্গ। আমাদের যৌন অনুভূতির জন্য ব্রেনের দুটো আলাদা অংশ দায়ী-তার একটি হচ্ছে ‘হাইপোথ্যালামাস’ অন্যটি হচ্ছে ‘সেরিব্রাল করটেক্স’। আমাদের ব্রেনের পেছনের সূক্ষ্ম হাইপোথ্যালামাস আমাদের মূল চাহিদাকে প্রভাবিত করে। খাদ্য খোঁজ করে, বিপদ থেকে পলায়ন করে, আমাদের সুরক্ষা করার জন্য যুদ্ধ করে এবং যৌনসঙ্গম ঘটায়। এগুলো হচ্ছে আমাদের মূল চাহিদা, যা আমরা অন্য প্রাণীদের সাথে সমভাবে ভাগ করে নিই।

বৃহৎ সেরিব্রাল করটেক্স যা থাকে আমাদের ব্রেনের সমমুখভাগে, যা দ্বারা আমরা শিখি এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করি। এটা আমাদের বুঝতে শেখায় যে কীভাবে আমরা চিন্তা করি, কীভাবে অনুভব করি এবং যৌনতার বিষয়ে ভূমিকা পালন করি। এটা হচ্ছে ব্রেনের সেই অঞ্চল যা আমাদের যৌন অনুভূতি সম্বন্ধে জ্ঞাত করায়। হাইপোথ্যালামাস আমাদের যৌনতাকে পরিচালনা করে। অনেক সময় এটাকে বলা হয় লিবিডো। কিছু সংখ্যক বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে, হাইপোথ্যালামাস আমাদের যৌনতার পূর্বাভিমুখীনতাকে যৌনাঙ্গ পরিচালনার জন্য গঠন করতে সাহায্য করে।
সেরিব্রাল করটেক্স আমাদের লিবিডোকে ভদ্রতা শেখায়। এটাই সেই স্থান যেখানে আমাদের মধ্যের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাসমূহ, আমাদের সামাজিক ও যৌন আচরণসমূহ বসবাস করে। এটা আমাদের যৌনাঙ্গকে পরিচালনার ব্যবস্থা করে যৌনতার খবরাখবর আদান-প্রদানের মাধ্যমে। যৌনতার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যৌনতার স্মৃতি মন্থন করে, যৌনতার কল্পনাকে উন্নত করে এবং যৌনতার ঝুঁকিকে মূল্যায়ন করে। এটা সেই সংবাদটি ধারণ করে রাখে যা আমাদের যৌনতার ধারণা, অনুভব এবং আচার-আচরণকে গঠন করে।
যৌনতার মনস্তত্ত্ব হচ্ছে আমাদের সেই জ্ঞান ব্যবস্থা যে, কীভাবে আমাদের যৌন পরিচালনা, যৌন অনুভূতিসমূহ, কল্পনাসমূহ, স্মৃতিসমূহ এবং চিন্তা একসাথে কাজ করে আমাদের মনে এবং আমাদের যৌন আচরণকে প্রভাবিত করে।
যৌনতার বাধানিষেধ
যদিও অনেক প্রাণীর মধ্যে সমকামিতার যৌনখেলা বর্তমান। তাদের যৌনতার পরিচালনা হয় বেশিরভাগই উর্বরতাবৃত্তের সময়ে। সাধারণত নারী পশুরাই তাদের গর্ভধারণের সময়কালে পুরুষ পশুদের সাথে মিলিত হওয়ার আগ্রহ দেখায়। পশুদের এই মিলনপর্বের সময়টাকে অর্থাৎ তাদের উর্বরতাবৃত্তের পিরিয়ডকে প্রায়ই বলা হয়ে থাকে এসট্রুস। নারী পশুর গাত্র থেকে এই সময়ে একটা গন্ধ ছড়ায়, যা পেয়ে পুরুষ পশুরা যৌনভাবে উত্তেজিত হয়। এই গন্ধ ছড়ানো শুরু হলেই বুঝতে হবে মাদী পশু এখন এসট্রুস অবস্থায় আছে। এই ধরনের যৌন উত্তেজনার গন্ধকে বলা হয়ে থাকে ফেরোমোন।
অনেক শ্রেণীর পশুদের মধ্যে মাদী পশু প্রায় একই সময়ে সবগুলোর এসট্রুস হয়ে থাকে। তখন ফেরোমোনসের গন্ধে বাতাস পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, যার কারণে মর্দ পশুদের যৌন উত্তেজনা বেড়ে যায়, যাকে বলা হয়ে থাকে রুট।
বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি যে, ফেরোমোনস মানুষের যৌনতার ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখে। আমরা নিশ্চিত করে জানি যে, যদিও নারী ও পুরুষের কোনো এসট্রুস বা রুট পিরিয়ড বলে কিছু নেই। এটাই হলো মানুষ ও পশুদের মধ্যে একটা বড় পার্থক্য- আমাদের যৌন পরিচালনা শুধু প্রজননের জন্যই সীমিত নয়। আমরা যে কোনো সময়েই যৌন জাগৃতির ইচ্ছা করতে পারি, যৌনাঙ্গ চালনা করতে পারি এবং যৌনানন্দ উপভোগ করতে পারি। তাতে নারী উর্বর হোক বা না হোক তা কোনো ব্যাপার নয়। আমাদের মানুষের যৌন পরিচালনা আরো আমাদের সম্ভব করে তোলে ব্যাপক আকারের বিবিধ প্রক্রিয়ায় যৌন জাগরণ ও আনন্দ উপভোগ করা। এসব মানুষের যৌনখেলা পশুদের মতো এতটাই সীমিত আকারের নয়। যদিও আমাদের রয়েছে অনেক বেশি যৌন আনন্দের ক্ষমতা অন্যান্য বেশিরভাগ পশুর চেয়ে, আমাদের যৌন পরিচালনা অনেক বেশি নিষিদ্ধ হতেও পারে।
যেসব বাধানিষেধ যা মানুষের যৌন পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, তা সাধারণত শারীরিক অপারগতার কারণে নয়, যেভাবে অন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে হয় আমাদের যৌনতার বাধানিষেধগুলো হচ্ছে সাধারণত সামাজিক। তারা সেরিব্রাল করটেক্সের মধ্যে বাণীবদ্ধ হয়ে থাকে। ব্রেনের এই অংশের মধ্যেই আমাদের যৌনতার পরিচিতি ও ভালোবাসার মানচিত্র উন্নতি লাভ করে। তারা গঠিত হয় আমাদের জীবন আরো আমাদের পরিবারের সঙ্গে জীবনের অভিজ্ঞতা এবং আমাদের সম্প্রদায়ের সামাজিক ও যৌনতার আদর্শ দ্বারা। এখানেই আমাদের যৌনতার অনুভব বসবাস করে। এই অনুভবগুলো প্রভাবিত করে যে, কীভাবে আমরা যৌনতায় মিলিত হই, কতটা বৈচিত্রতায় আমাদের যৌনতার আচরণ আমরা উপভোগ করতে পারি এবং কতটা আনন্দ আমরা পেতে পারি।
অনেকগুলো অনুভব যা আমাদের আছে তা হচ্ছে যৌনতা সম্বন্ধে বাধা-নিষেধ। এসব বাধানিষেধের অনেকগুলোই আমাদের নিজেদের ও আমাদের সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকই অন্যকে আমাদের সাথে জবরদস্তি যৌনমিলনের জন্য বাধা অনুভব করি। অন্যদিকে অনেকগুলো বাধা-নিষেধ আছে যা অনুভব করি তা শুধু নিজেদের যৌনভাবে উপভোগ করায় বাধা দেয়। উদাহরণস্বরূপ আমরা চাইতে পারি যে আমাদের সঙ্গী আমার বিশেষ কোনো অঙ্গ সপর্শ করুক কিন্তু হয়তো আমরা জানি না সেটা জিজ্ঞেস করা সঠিক কি না।
আমাদের যৌনতার বেশিরভাগ নিষেধ জড়িত রয়েছে আমাদের দেহের কল্পনায়, আমাদের আত্মসমমানের সাথে, ঈর্ষা, হোমোফোবিয়া এবং আমাদের আন্তরিক হওয়ার সামর্থ্যের সাথে।
দেহের ভাব বা প্রতিবিম্ব
আমাদের সকলেরই মনের ভাব আছে যে, আমাদের কেমন দেখায়। এই মনের ছবি হচ্ছে আমাদের মনের কল্পনার অংশবিশেষ এবং এটায় রয়েছে আমাদের সেক্স, সেক্সুয়ালিটি এবং যৌন জীবনের উপরে অনেক বড় প্রভাব। আমাদের শরীর সম্বন্ধে আমাদের অনুভবসমূহ দেহ কল্পনার অন্যান্য অংশের সংগঠক।
একটি ভালো শরীরের প্রতিবিম্ব হচ্ছে আমাদের পরিবারের এবং বন্ধু-বান্ধবের প্রদত্ত একটি উপহার। এর দ্বারা আমরা নিরাপত্তা অনুভব করতে পারি আমাদের যৌনতা ও যৌনজীবনের বিষয়ে। তাতে আমরা ছোট কিংবা বড় হই, মোটা কিংবা পাতলা হই, পেশিবহুল বা নরমদেহী, সুন্দর অথবা কালো তাতে কিছু এসে-যায় না। একটি দুর্বল শরীরের প্রতিবন্ধকতা আমরা পেতে পারি আমাদের পরিবারের কাছ থেকে, বন্ধুদের কাছ থেকে যারা আমাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে, অপমান করে এবং আমাদের হস্তমৈথুন ও যৌনাঙ্গসমূহের জন্য নেতিবাচক অনুভব এনে দেয়। দুর্বল শরীরের কল্পনা আমাদের যৌনতা ও যৌন জীবন সম্বন্ধে অনিশ্চয়তার অনুভব এনে দেয়, তাতে আমরা যতই সুন্দর চেহারার হই না কেন।
যৌনতায় বাধানিষেধের কারণে আমরা আমাদের শরীর সম্বন্ধে খারাপ ধারণায় পৌঁছতে পারি এবং দুর্বল শরীরের কল্পনার কারণে আমাদের যৌনতার বাধানিষেধ আরো প্রবৃদ্ধি লাভ করে। তারা একটা লম্পটবৃত্ত তৈরি করে। প্রত্যেকেই অন্যদের তীব্রতর করে তোলে। যেভাবে আমাদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবেরা আমাদের শরীরের কল্পনার জ্ঞানের প্রাধান্য ঘটায় তাদের সমর্থন অথবা প্রত্যাখ্যান দ্বারা, তেমনি যে সমাজে আমরা বাস করি সেই সমাজও আমাদের সেই জ্ঞানের প্রতি কিছু অবদান রাখে। টেলিভিশন ও অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম আমাদের বডি ইমেজ সম্বন্ধে একটা সামাজিক আদর্শ গঠন ও প্রতিবিম্বিত করতে একটা প্রামাণিক ভূমিকা পালন করে। এর দ্বারা যে আদর্শ বেঁধে দেয়া হয় নারী ও পুরুষের জন্য, তাতে পৌঁছানো আমাদের বেশিরভাগ লোকের জন্যই সম্ভবপর নয়।
জনপ্রিয় পত্রিকাগুলোতে দেখানো হয় স্বয়ংসম্পূর্ণ নারী ও পুরুষ এবং রচনা যোগ করে যে, কীভাবে একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ শরীর লাভ করা যায়। বিজ্ঞাপন দাতারা আমাদেরকে লক্ষ লক্ষ কল্পনার দ্বারা বাঁধে এবং বুঝিয়ে দেয় যে সুন্দর ও যৌন হওয়ার অর্থ কী? একটি স্বাস্থ্যকর, ফিট এবং ছিমছাম শরীর হচ্ছে একটি আশ্চর্য জিনিস, কিন্তু মিডিয়ার বার্তা হচ্ছে এই যে, অসামর্থ্য ব্যক্তিদের সৌন্দর্যের আওতায় ধরা হয় না। অযাচিত মুখের চুল, মুখব্রণ, নরম পেট অথবা ছোট স্তন ওয়ালিদের সুন্দরের তালিকায় নাম নেই। প্রকৃতপক্ষে হাজার হাজার সুন্দরী, যৌনকামী এবং ভালোবাসার মতো নারী ও পুরুষ আছেন পৃথিবীতে যারা অসামর্থ্য, যাদের মুখে চুল আছে, ব্রণ আছে, নরম পেট আছে এবং ছোট স্তন রয়েছে।
সম্ভবত আমরা সেই সত্যকে ভুলে গিয়ে থাকব যে, যখন আমরা ছায়াছবির ইমেজের সাথে নিজেদের তুলনা করি অথবা টেলিভিশনে যাদের দেখি বা ম্যাগাজিনে যাদের ছবি ছাপা হয়। আমরা নিজেদের শরীর সম্বন্ধে যেভাবে আপদযুক্ত ধারণা করি তার দ্বারাই বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের লাভজনক ব্যবসার জন্য একটা আদর্শিক ছবির প্রচার চালায়। আমাদের নিজেদের চেহারা সম্বন্ধে যতটাই বেশি অনিশ্চিত হই ততটাই বেশি করে আমাদের সমস্যা দূর করার জন্য বিজ্ঞাপিত উৎপাদনগুলো কিনতে থাকি। এর দ্বারা আমাদের যৌনতার বাধানিষেধ আসার সম্ভাবনাই বেশি।
যদিও একটি মাত্র কারণ নয়, যৌনতায় বাধানিষেধ এবং দুর্বল শরীরের চেহারার কারণে জটিল ধরনের পেটের সমস্যা, অ্যানোরেক্সিয়া, বুলিমিয়া এবং বিনজ ইটিং ডিসঅর্ডার হয়ে থাকে। এই গোলযোগের কারণে তাদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয়। বিশেষ করে তাদের যৌনতাকে। যদিও ইটিং ডিসঅর্ডার নারীদের মধ্যে অতি সাধারণ। ইটিং ডিসঅর্ডার অল্পবয়সী ছেলেদের মধ্যেও বাড়ন্ত আকারে দেখা যাচ্ছে। যেসব নারীর স্নায়বিক ক্ষুধামন্দা আছে তারা শরীর পাতলা করার জন্য উপবাস করে। দুর্ভাগ্যবশত তারা বিশ্বাস করে যে, তারা না খেয়ে থেকেও শরীরকে যথেষ্ট পাতলা করতে পারবে না। পাঁচজনের মধ্যে একজন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় অথবা মারা যায় মেল নাইট্রেশনের সাথে জড়িত জটিলতার জন্য। নারীরা স্নায়বিক ক্ষুধামন্দায় আক্রান্ত হলে তাদের আরো অনেকগুলো কঠিন জীবন বিপন্নকারী রোগ আক্রমণ করে। এ সময়ে তাদের রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে, উর্বরতা, স্তনের টিস্যু, যোনির পিচ্ছিলতা এবং যৌন ইচ্ছা কমে যেতে পারে।
পাতলা হওয়ার জন্য বুলেমিক নারী এবং পুরুষ অনেক খাবার ভক্ষণ করেন এবং বিরেচনমূলক খাবার দ্বারা দীর্ঘ সময়ের জন্য উপবাস করেন, জুলাপ নেন অথবা ইচ্ছা করে বমি করেন। বিজন ইটিং হচ্ছে জবরদস্তি করে বেশি খাওয়া। এটা করা হয় চাপ ও দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য, তার সাথে যৌনতার দুশ্চিন্তাও জড়িত আছে। মানুষ চর্বিযুক্ত হয়ে গেলে যৌনতার বাধানিষেধ চলে আসে এবং তারা যৌনমিলন পরিহার করার জন্য একটা বাহানা খুঁজে পায়।
ক্ষুধামন্দাকে সাইকোথেরাপি ও পেশাদারি ডাক্তারি পরামর্শ দ্বারা ভালো করা যেতে পারে। এমনকি খাদ্য খাবারের গোলযোগ ঠিক হওয়ার পরেও যাই হোক একজন লোক তার ফলাফলের জন্য সারা জীবন চেষ্টা করে যেতে পারে।
যখন আমাদের বেশিরভাগ লোকই কঠিন ক্ষুধামন্দা রোগে আক্রান্ত হব না, তার পরেও আমাদের শরীর নিয়ে দুর্ভাবনা কম নয় এবং এর কারণে যৌনতায় বাধানিষেধ আসতে পারে এবং দ্বন্দ্বেরও উপস্থিতি হতে পারে। আমরা যে সঙ্গীদের পেতে আশা করি তাদের জন্য কি যথেষ্ট সুন্দর? আমরা কি যথেষ্ট হ্যান্ডসাম? আমরা কি সঠিক লম্বা চাওড়া গঠনের? আমরা কি যথেষ্ট দীর্ঘ? আমরা কি অত্যধিক দীর্ঘ? আমরা কি সঠিক রঙের? আমরা কি যৌনতায় আকর্ষণীয়? এসব বিষয়ে চিন্তা করে আমরা খুব অসুখী হয়ে উঠতে পারি। তারা আমাদের মনের মধ্যে বেশি সময় ধরে যৌন কাজকর্মের মধ্যে একঘেয়েভাবে কাটায় তাতেও আমাদের যৌন আনন্দের মধ্যে বাধা আসতে পারে।
আত্মাভিমান
আত্মাভিমান হচ্ছে আত্মবিশ্বাস প্রকাশের অন্য আর একটি মাধ্যম। এটা হচ্ছে আমাদের নিজেদের জন্য আত্মসমমানবোধ। আমাদের এটা শক্তিশালী অনুভব করতে সাহায্য করে, সামর্থ্যবান ও যথাযথ-এর অনুভব এনে দেয়। আত্মাভিমান হচ্ছে শরীরের একটি প্রতিবিম্ব এবং শরীরের প্রতিবিম্ব হচ্ছে আত্মাভিমানের একটি প্রয়োজনীয় অংশ। আত্মাভিমান প্রায়ই হয়ে থাকে একটি উপহার যা আমরা পেয়ে থাকি আমাদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে। আমরা যদি এটা তাদের কাছ থেকে নাও পাই তবুও আমরা নিজেরাই এর উন্নতি সাধন করতে পারি, কিন্তু উপঢৌকন হিসেবে পাওয়ার চেয়ে সেটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য ব্যাপার। শরীরের প্রতিবিম্বের মতো আত্মাভিমানের রয়েছে আমাদের যৌন জীবনের উপরে অনেক বেশি প্রভাব। এটা আমাদের যৌন জীবনকে নিরাপদ ও নিরুদ্বেগ অনুভব করতে সাহায্য করে। এর অভাবে আমাদের মধ্যে যৌনতার বাধা-নিষেধের অনুভব এনে দেয়। যৌনতার ক্ষেত্রে যত বেশি বাধা-নিষেধ আমরা অনুভব করি তত বেশিই আমাদের আত্মাভিমান কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আত্মাভিমান আমাদের সব ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়, বিশেষ করে ওইসবগুলোতে যেখানে আন্তরিকতা অনেক বেশি থাকে। তার মধ্যে ওইসব সম্পর্কও রয়েছে যেমন- যৌন সম্পর্ক। অন্য লোকের সাথে কোনো সম্পর্ক গড়তে হলে আমাদের অনেক বেশি খোলামেলা হতে হয়। আমরা যখনই একটা আত্মীয়তা গড়তে যাই তখনই আমরা একটা আবেগী ঝুঁকি নিই, কারণ আমরা জানি এটা কার্যকর নাও হতে পারে। এই ধরনের ঝুঁকি নিতে আত্মাভিমানের প্রয়োজন হয়। চুক্তির নিমিত্তে আলোচনার জন্যও আত্মাভিমানের প্রয়োজন। আত্মাভিমানের প্রয়োজন রয়েছে সীমা নির্ধারণ করা ও আত্মীয়তার ক্ষেত্রে সুস্থ সমঝোতা করার জন্য।
নারী ও পুরুষের মধ্যে যাদের আত্মাভিমান নেই তারা যা কিছু পায় তাই নিতে বাধ্য হয়, অনেক কম দাবি উত্থাপন করে এবং শেষ পর্যন্ত তারা শোষিত ও নির্যাতিত হয়। তাদের আরো বেশি শোষিত করার সম্ভাবনা থাকে যখনই তারা অন্যকে শোষণ করার সুযোগ পায়। এটা করে থাকে তাদের দুর্বল আত্মাভিমানের সম্পূরণের জন্য। এটা হচ্ছে অন্য একটি দোষযুক্ত আবর্ত।
দৈহিক সাজা
দৈহিক সাজা দ্বারা আত্মাভিমানকে অবমূল্যায়ন করা হয়। এটা অনেকটা জীবন অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে। তার মধ্যে রয়েছে শারীরিক নির্যাতন, প্রেমিককে হারানো, যৌন নিপীড়ন, অবহেলা এবং কঠোর মাতৃত্ব-পিতৃত্ব যা যৌনতাকে নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে লালন করে। এটা আরো হতে পারে মদ ও অন্যান্য মালামালের ব্যবহার দ্বারা। তারা যাকে ইচ্ছা তাকে এক্সপ্লয়েট করে থাকে তাদের দুর্বল আত্মাভিমানকে পরিপূর্ণ করার জন্য। এটা আরো হতে পারে ক্রনিক অসুস্থতার কারণে, যেমন- ডিপ্রেশন ও ডায়াবেটিস।
আত্মাভিমানের অভাবের কারণে আমাদের মধ্যে যৌন আনন্দের বাধা-নিষেধ আসতে পারে- দুশ্চিন্তার মাধ্যমে যে, আমাদের কেউ ভালোবাসে কি না, আমরা আকর্ষণীয় কি না, আমরা যথোপযুক্ত কি না এবং আমাদের মতামত ও ইচ্ছা প্রকাশের অধিকার আছে কি না। আত্মাভিমানের অভাবের কারণে এটা প্রকাশ করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় যে, আমরা আমাদের যৌন ইচ্ছার কথা প্রকাশ করতে পারি না এবং আমরা যৌনতার দিক দিয়ে নিজেদের সুরক্ষা করতেও পারি না। এটাও ঈর্ষার আর একটি কারণ যা হচ্ছে মূল্যবান সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ভয়ের সংকেত। আত্মাভিমান আমাদের ভালো অনুভব করার জন্য অনুমতি দেয় এবং আমরা যা চাই তার জন্য চাহিদা দেয় এবং আমাদের যৌন স্বাস্থ্যের পরিচর্যা করার জন্য শক্তি যোগায়। যদি আমরা আত্মাভিমান হারিয়ে ফেলি আমাদের জীবনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে, আমরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পরামর্শ দিয়ে নতুন করে গড়তে পারি।
ঈর্ষা
ঈর্ষা হচ্ছে আমাদের সঙ্গীদের ভালোবাসা এবং প্রতিশ্রুতির বিষয়ের দুশ্চিন্তা। যৌনতার বাধা ও দ্বন্দ্বেব মধ্যে এটা একটা প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করতে পারে। সব ধরনের সংস্কৃতিতে ঈর্ষা দেখা যায় না। এটার সম্ভাবনা সেখানেই অধিক যেখানে বিবাহকে দেখা হয় একটা দোষমুক্ত যৌনতা, নিরাপত্তা এবং সামাজিক স্বীকৃতি হিসেবে। ঈর্ষা বেশিরভাগই দেখা যায় অত্যন্ত দুর্বল আত্মাভিমানী নারী ও পুরুষদের মধ্যে যারা তাদের জীবন নিয়ে অসুখী। এটা অসম্ভব সব ধারণার ওপর নির্ভরশীল। এটা সেই অসম্ভব ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত যে, আমরা অবশ্যই আমাদের প্রেমিকাদের সব ধরনের চাহিদা পূরণ করব এবং তারাও আমাদের সব চাহিদা পূরণ করবে। এটা সেই সত্যটাকে মানতে চায় না যে, যে লোকদের আমরা ভালোবাসি তাদের অনেক বেশি চাহিদা আছে যা আমরা পরিপূর্ণ করতে পারি না এবং আমাদেরও চাহিদা আছে যা তারা পূরণ করতে পারে না।
যদিও আমাদের আত্মাভিমান আছে আমরা আমাদের অনুভবকে কেউ স্বীকৃতি দিলে আমরা তাকে মর্যাদা দিতে পারি যে, আমাদের ভালোবাসার লোকেরা হচ্ছে আকর্ষণীয়, পারঙ্গম, সপর্শকাতর, যত্নশীল, বুদ্ধিমান এবং আনন্দদায়ক। যদি আমাদের কম আত্মাভিমান থাকে তাহলে আমাদের ভালোবাসার লোকদের নিকট থেকে বারবার আশ্বাসবাণীর প্রয়োজন যে আমাদের ওইসব গুণ আছে। ঈর্ষা যৌন সম্পর্ককে খেয়ে ফেলতে পারে এবং সৃষ্টি করতে পারে যৌনতার বাধা-নিষেধ ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব।
অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়া
হোমোফোবিয়া হচ্ছে সমকামিতার ভয়। আমাদের সমাজ এমন ধরনের নেতিবাচক মনোভাবকে উন্নীত করেছে যে, এখন অনেক মানুষই সমকামিতাকে ভয় পায়, তাদের অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়া রয়েছে। তাতে হোক না কেন তারা লেসবিয়ান, গাই, বাইসেক্সুয়াল, স্ট্রেইট অথবা ট্রান্সজেন্ডার। এই ভয়কেই বলা হয়ে থাকে Internalized Homophobia’ বা অভ্যন্তরীণ সমকামিতার ভয়। এটা নারী ও পুরুষদের মধ্যে যৌনতার বাধা-নিষেধের কারণ হতে পারে; যদিও এটা বেশিরভাগ পুরুষের মধ্যে হতে দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ সমকামিতার ভয় এতটাই শক্তিশালী যে ৩০% পর্যন্ত লেসবিয়ান, গাই এবং বাইসেক্সুয়াল বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেমেয়েরা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এর দ্বারা অত্যন্ত কঠিন ডিপ্রেশনও হতে পারে। লেসবিয়ান, গাই এবং বাইসেক্সুয়াল দলের সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের সমর্থনদানের এবং আত্মাভিমানের ব্যাপারে যুবক-যুবতীদের সমর্থন যোগানোর জন্য অত্যন্ত বেশি সাহায্যকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে। পেশাদারি পরামর্শও যথেষ্ট সাহায্যকারী হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ সমকামিতার ভয়-ভীতি, গাই ও লেসবিয়ানদের তাদের যৌনসঙ্গীদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক গঠনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে। এটা আরো এইরূপ ভীতির সঞ্চার করতে পারে যে তারা যৌন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। তারা স্ট্রেইট হওয়ার ভান করবে অথবা অন্য লিঙ্গের সাথে নৈরাশ্যজনক ও আশাহতভাবে যৌন সম্পর্ক গড়তে বাধ্য হবে। স্ট্রেইট লোকেরা যারা এর জন্য দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় যে, তাদের কিছু যৌনাকাঙ্ক্ষা এবং কল্পনা হতে পারে সমকামিতামূলক, হতে পারে নারীর সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে অনেক কম সামর্থ্যবান। তারা নারীদের সাথে যৌন সম্পর্ক গঠনে হতে পারে Tough gay অথবা Maco মনোভাব গড়ে তোলে। যেসব পুরুষের অভ্যন্তরীণ সমকামিতার ভয় আছে তারাও gay bashing এবং অন্যান্য যৌনতার আক্রমণ চালিয়ে বসতে পারে।
অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়ার চিকিৎসা করানো যেতে পারে পেশাদারি ডাক্তারের পরামর্শ এবং সাইকোথেরাপির মাধ্যমে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো সেই পদ্ধতিকে গ্রহণ করা যাতে একজনের যৌনতার পূর্বাভিমুখীনতা এবং লিঙ্গের পরিচিতির সাথে খোলামেলা হওয়া যায়। এটা আরো হচ্ছে সামাজিক ও অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়াকে চ্যালেঞ্জ করার পদ্ধতি। এর অনেকগুলো স্তর আছে প্রথমটি হচ্ছে নিজের মধ্যে থেকে নিজেকে বের করে আনা। এটা বয়ঃসন্ধিকালে হতে পারে, কিন্তু এটা বয়োবৃদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত নাও হতে পারে। অন্য স্তর হচ্ছে অন্য মানুষের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসা বন্ধু-বান্ধব, পরিবার, পড়শী, স্কুলের সাথী, সহকর্মীবৃন্দ এবং অন্যান্য।
বেরিয়ে আসার পদ্ধতিতে আত্মমর্যাদা গঠিত হয় এবং আন্তরিক হওয়ার সামর্থ্য বাড়ে, কিন্তু এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যেসব লোকের মধ্য থেকে আমরা বেরিয়ে আসব তারা সকলেই একভাবে বা অন্যভাবে সমকামিতা ভীতিতে আক্রান্ত। তাদের মধ্যের খুব কম লোকে এই পদ্ধতিটাকে সহজ করার জন্য সাহায্য করতে পারে, কিন্তু বেশিরভাগ লোকই তা পারে না। এ চাপের আক্রমণ থাকা সত্ত্বেও বাইরে চলে আসায় অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়ার অনেক বেশি উপশম হয়; যদিও সম্পূর্ণ ভালো হয় না। অনেক লোক যারা জীবনের বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটিয়েছেন তথাপি তারা অভ্যন্তরীণ সমকামিতাভীতির সাথে জড়িত যৌন এবং সামাজিক বাধানিষেধের দ্বারা ভোগান্তির শিকার হন। এর হাত থেকে নিজেদের মুক্ত করতে এমন একটা পদ্ধতি মানতে হবে যা জীবনের বেশিরভাগ সময়েই চালিয়ে যেতে পারা যায়।
আন্তরিকতা
আন্তরিকতা বা ইন্টিমেসি হচ্ছে আমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতজনের সাথে যে নিজস্ব ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার ভাব ঘটে তাই। এটা আমাদের বেশিরভাগ আত্মীয়তার বা সম্পর্কের ভিত্তি, তাতে সেই সম্পর্কটা হোক না কেন যৌন সম্পর্ক বা তা নয়।
আন্তরিকতা বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটা আর একটি আশীর্বাদ বা উপহার যা আমাদের মাতা-পিতা আমাদের দিতে পারেন। আমাদের শিশু হিসেবে যদি আদর-যত্ন করা হয়, আমাদের শিশুকাল থেকে যদি সমমান সহকারে লালন-পালন করা হয় এবং আমরা একটা আন্তরিকতার পরিবেশে বড় হতে থাকি এবং যৌনাঙ্গ সম্বন্ধে একটা স্বাস্থ্যকর মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠি এবং আমরা আমাদের নিকটতম আত্মীয়দের বিশ্বাস করতে শিখি তা আমাদের ক্ষতি করবে না। তাতে আমরা আমাদের জীবনসঙ্গীদের সাথে অনেক আন্তরিকতার সাথে অনেক সহজে মিলেমিশে থাকতে সমর্থ হব। আমরা অন্য লোকদের সাথেও সহজ হতে পারব। আমরা যদি আমাদের যৌনসঙ্গীদের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ হতে পরি, তাহলে আমরা একে অন্যের মনোভাব বা অনুভবকে ভাগ করে নিতে পারব, আমাদের ইচ্ছাকে প্রকাশ করতে পারব, স্বাস্থ্যকর সমঝোতা করতে পারব এবং নির্ভয়ে তাদের সাথে, মতবিরোধের কথা ব্যক্ত করতে পারব। আরো আমরা তাদের অনুভব ও মনোভাবকে সমর্থন দিতে পারব।
অনেক নারী-পুরুষই আবিষকার করে থাকেন যে, তারা যেভাবে তাদের যৌন সাথীদের সাথে আন্তরিক হতে অসমর্থ ঠিক তেমনি অন্যদের সাথেও আন্তরিক হতে অসমর্থ। তারা দেখতে পারেন যে, তারা তাদের অন্তরঙ্গ মানুষের সাথেও যৌনমিলন করতে ততটাই অসমর্থ। এই ধরনের যৌনতার বাধানিষেধ দীর্ঘস্থায়ী বিবাহিত জীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। যৌনসঙ্গীদের সাথে যৌনতায় অসামর্থ্যতা আসতে পারে যৌনতার বাধানিষেধের কারণে, যেটা জড়িত আছে শরীরের প্রতিবিম্বের সাথে, আত্মাভিমানের সাথে এবং অভ্যন্তরীণ সমকামিতার ভীতির সাথে। অত্যন্ত উন্নত সামাজিক দক্ষতা অর্জনকারী নারী-পুরুষরাও কখনো আন্তরিক হতে অসমর্থ হতে পারে। আন্তরিক হওয়ার বিষয়ে সমস্যাগুলো সাইকোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।
আমাদের যৌনতার বাধানিষেধ ও দ্বন্দ্ব
আমরা এমন একটা সংস্কৃতির মধ্যে বসবাস করি যেটা যৌনতার বিষয়ে হাজার হাজার বছর ধরে ভয়-ভীতি ও নিপীড়নের মধ্যে রয়েছে। যেহেতু এটা যৌন এবং যৌনতার বিষয়ের বিপদের উপরেই জোর দিয়ে এসেছে সুতরাং আমরা যৌন চালনার বিষয়ে অনেক বাধানিষেধ ও সংঘর্ষ অনুভব করতে পারি। যৌন চালনা এবং বাধানিষেধের সংঘর্ষকে বলা হয় সেক্সুয়াল কনফ্লিক্ট বা যৌনতার দ্বন্দ্ব। এটা আমাদের আত্মাভিমানের সাথে যৌন আনন্দের সাথে এবং আমাদের যৌন সম্পর্কের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে।
আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিক আদর্শের সাথে যখন যৌন আবেগ এবং ইচ্ছাসমূহের সামঞ্জস্যের ব্যত্যয় ঘটে তখনই আমাদের মধ্যের একটা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ি। উদাহরণস্বরূপ আমরা নাও জানতে পারি যে, বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ হিসেবে আমাদের যৌন উপভোগ করা সঠিক আছে। আমাদের একটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে যে, যৌন উপভোগ হচ্ছে যুবক এবং সুন্দর মানুষের জন্য। আমরা যদি এই সাধারণ কিংবদন্তিতে বিশ্বাস করি তবে আমরা বয়োবৃদ্ধ মানুষের মতো আমাদের স্বাভাবিক যৌন আবেগকে বাধানিষেধের আওতায় ফেলতে পারি। এই যৌনতার দ্বন্দ্ব জীবনে আমাদের অনেক কম সুখী হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আমাদের ভেতরস্থ যৌনতার দ্বন্দ্ব এই বিষয়ে যে কোনটা সঠিক আর কোনটা সঠিক নয়, এটা জীবনের যে কোনো স্তরে এসে ঘটতে পারে।
বেশিরভাগ মানুষ যারা যৌনতার দ্বন্দ্বের মধ্যে পতিত হয় তা হয়ে থাকে মোটামুটি যৌনতার নিরানন্দতা বা অস্বাচ্ছন্দ্য ও যৌনতার অপারগতার মধ্যবর্তী স্থানে। কিন্তু এই দ্বন্দ্বের দ্বারা যৌনতার অস্বাচ্ছন্দ্য হলে তা আমাদের যৌন জীবনের উপরে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। পরবর্তীতে কিছু যৌনতায় অপারগতার কথা বলা হচ্ছে, যা যৌনতার ওপর নেতিবাচক অনুভবের কারণে অথবা অন্য লোকের যৌনতা সম্পর্কিত অনুভবের কারণে হয়ে থাকে। যদিও আমাদের এই অপারগতা নেই তাকে বুঝতে পারলে আমাদের যে অস্বাচ্ছন্দ্য আছে তাকে বোঝা যাবে।
অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
এমবিবিএস এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি
E-mail : professorfiroz@yahoo.com
sunargo.info

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More