Thursday, July 21, 2011

লিঙ্গিক বিভ্রান্তি

ডাঃ জাকারিয়া সিদ্দিকী
এটা একদম সার্বজনীন প্রচলিত বিভ্রান্তি পুরুষাঙ্গ যত বড় হবে সঙ্গমে পুরুষের ভূমিকা তত বেশি কার্যকরী হবে। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে পুরুষাঙ্গের শিথিল আর উত্তেজিত উভয় অবস্থার আকার ব্যক্তির যৌনতার ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। আকৃতিতে বড় মানে অসাধারণ যৌনক্ষমতাধর পুরুষ
যৌন গবেষক হিসেবে মাস্টার জনসনকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেবার দরকার নেই। এ লিঙ্গিক বিভ্রান্তি অংশে পুরুষাঙ্গকে ঘিরে চারপাশে প্রচলিত নানান অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার বিদ্যমান সে সম্পর্কে অভিমত ব্যক্ত করেছেন উইলিয়াম মাস্টার আর ভার্জিনিয়া জনসন।
লিঙ্গিক বিভ্রান্তি
এটা একদম সার্বজনীন প্রচলিত বিভ্রান্তি পুরুষাঙ্গ যত বড় হবে সঙ্গমে পুরুষের ভূমিকা তত বেশি কার্যকরী হবে। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে পুরুষাঙ্গের শিথিল আর উত্তেজিত উভয় অবস্থার আকার ব্যক্তির যৌনতার ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। আকৃতিতে বড় মানে অসাধারণ যৌনক্ষমতাধর পুরুষ। ডিকিনসন সর্বপ্রথম কিছুটা বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে বিভিন্ন পুরুষাঙ্গের আকার বা মাপ পরিমাপ নিয়েছিলেন। তিনি লোয়েব নামের অপর একজন গবেষকের লিঙ্গিক রিপোর্টকেও সমর্থন করেছিলেন-শিথিল অবস্থায় পুরুষাঙ্গের আকার সীমানা হল ৮.৫ হতে ১০.৫ সেন্টিমিটার যার গড় আকার হয় ৯.৫ সেমি। আমাদের ল্যাবরেটরি গবেষণাতে পুরুষ সদস্যদের পুরুষাঙ্গের পরিমাপ আগেকার সে সব পরিমাপের সাথে সাদৃশ্যতা বিদ্যমান।
পুরুষাঙ্গের আকারকে যৌন অক্ষমতার নির্ধারক মনে করা হয়ে থাকে। এমনও ধারণা প্রচলিত উদ্রিক্ত অবস্থায় বড় আকারের পুরুষাঙ্গ আরও বৃহদাকৃতির হয়ে আসে আর ছোট আকারের পুরুষাঙ্গের আকার তেমন বেশি পরিবর্তন ঘটে না। পুরুষ সদস্যদের একাংশের ওপর চালানো গবেষণাতে এটি ভ্রান্ত প্রমাণিত হতে দেখা গেছে। গবেষণার জন্য চলিস্নশ সদস্য বিশিষ্ট দুটো গ্রুপ নেয়া হয়-প্রথম গ্রুপের লোকদের শিথিল অবস্থায় পুরুষাঙ্গের আকার ৭.৫-৯ সেন্টিমিটার ছিল। আর দ্বিতীয় গ্রুপের পুরুষাঙ্গের আকার ১০-১১.৫ সেন্টিমিটার ছিল। মোটামুটি সতর্কতার সাথে এ পরিমাপ নেয়া হয়েছিল। অতঃপর যৌনাঙ্গের উত্তেজিত অবস্থায় ঊর্ধ্বস্থিতি পর্যায়ে উদ্রিক্ত পুরুষাঙ্গের আকার নেয়া হয়। ছোটো আকৃতির পুরুষাঙ্গ গ্রুপে (৭.৫-৯ সেন্টিমিটার) যৌন শিহরণের ঊর্ধ্বস্থিতি পর্যায়ে গড় হিসেবে ৭.৫-৮ সেমি পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। হিসেবটা শিথিল অবস্থায় প্রায় দ্বিগুণের সমান। অপরদিকে বৃহদাকৃতির পুরুষাঙ্গ গ্রগ্রুপে (১০-১১.৫ সেমি) ঊর্ধ্বস্থিতি পর্যায়ে পুরুষাঙ্গের আকার ৭-৭.৫ (সেমি পরিমাণ) বাড়তে দেখা গেছে।
পুরুষাঙ্গের পরিমাণ খুবই সতর্কতার সাথে নেয়া হয়েছিল। এ সময়ে ব্যক্তির মনে কোনো ধরনের প্রাক উদ্দেশ্য কাজ করেনি। বর্ণনার খাতিরে পরিমাপগুলোকে ০.৫ সেমি পর্যন্ত হিসেব করা হয়। পুরুষাঙ্গের গোড়ার দিককার পিউবিক সিমকায়োসিম অগ্রবর্তী মার্জিন হতে পুরুষাঙ্গের পৃষ্ঠ বরাবরে পুরুষাঙ্গ অগ্রভাগ পর্যন্ত মাপা হয়। ৮০ জন লোকের পুরুষাঙ্গ শিথিল আর উদ্রিক্ত অবস্থায় একজন লোক দ্বারা পরিমাপ করিয়ে নেয়া হয়েছিল ও পরপর তিনবার এটি করা হয়েছিল। একজন লোক দিয়ে সমস্ত পরিমাপ করা হয়েছিল, যে কোনো ব্যক্তিনির্ভর সক্ষ্ম বিভ্রান্তি থাকলে তা যেনো সবার বেলাতে ঘটে থাকে। তিনটি পরিমাপের একটা নেয়া হয়েছিল হস্তমৈথুনকালে অপর দুটো পরিমাপ সক্রিয় সঙ্গমের ঊর্ধ্বস্থিতি পর্যায়ে ফান্ড দিয়ে পুরুষাঙ্গের মাপ নেয়া হয়। মাপ নেয়ার বেলাতে লক্ষ্য রাখা হয়েছিল পুরুষাঙ্গের ঊর্ধ্বস্থিতি পর্যায়ের শেষ বিন্দু না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। এ কারণে একই পুরুষাঙ্গের বার বার মাপ নেয়া হয়েছে।  এ সমস্ত পরিমাপ হতে যেটি বের হয়ে আসে-শিথিল অবস্থায় বৃহদাকৃতির পুরুষাঙ্গ শিথিল ক্ষুদ্রাকৃতির পুরুষাঙ্গ অপেক্ষা তেমন বেশি মাত্রায় স্ফীতি ঘটে না। উত্তেজনাজনিত স্ফীতির গড় আকার ছোটো বড় পুরুষাঙ্গের মাঝে তেমন একটা পার্থক্য দেখা যায়নি।
গবেষণাতে আরও কিছু দিক খুবই উল্লেখযোগ্য। পুরুষদের মাঝে পুরুষাঙ্গের সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল অপর এক পুরুষের মাঝে যাকে এ গবেষণা দলে অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি। শিথিল অবস্থায় তার পুরুষাঙ্গের আকার ছিল ৭.৫ সেন্টিমিটার। উদ্রিক্ত অবস্থায় পুরুষাঙ্গের আকার ৯ সেমির বেশি বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে উদ্রিক্ত অবস্থায় পুরুষাঙ্গ শিথিল অবস্থার আকারকে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পুরুষাঙ্গের আকারের সবচেয়ে কম পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটেছিল এমন এক পুরুষের বেলাতে যার পুরুষাঙ্গ মোটামুটি বৃহদাকৃতির ছিল। শিথিল অবস্থায় তার পুরুষাঙ্গের আকার ছিল প্রায় ১১ সেন্টিমিটার। উদ্রিক্ত অবস্থায় তার পুরুষাঙ্গ মাত্র ৫.৫ সেমি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছিল। এ দুটো পুরুষাঙ্গের পরিমাপও আগের পদ্ধতি মোতাবেক করা হয়েছিল।
গবেষক পিয়ারসল আগেই অভিমত দিয়েছিল দেহের অন্যসব অঙ্গের মত সাধারণ দৈহিক বিকাশের সাথে যে একটা মোটামুটি স্থির আনুপাতিক সম্পর্ক দেখা যায় তা পুরুষাঙ্গের বেলাতে তেমন একটা দেখা যায় না। আমাদের চারপাশে এমন কিছু অন্ধবিশ্বাস প্রচলিত আছে। নানান সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয়ে থাকে একজন মানুষের কঙ্কালতন্ত্র আর মাংসপেশি যত বেশি বিকাশপ্রাপ্ত হবে মানে দেহ গড়ন বৃহদাকৃতির হবে তার পুরুষাঙ্গও তত বৃহদাকৃতির হবে। এ বাড়তি আকৃতির হিসেব শিথিল আর উদ্রিক্ততা দু’অবস্থাতেই। গবেষণায় অংশ নেয়া ২১-৮৯ বছর বয়সের ৩১২ জন পুরুষের পুরুষাঙ্গের আকার পিয়ারসলের অভিমতেরই সমর্থন দেয়- দেহের গড়ন আর পুরুষাঙ্গের আকারের মাঝে কোনো যোগসত্রতা নেই। এসব পুরুষদের মাঝে সর্ববৃহৎ পুরুষাঙ্গের আকার শিথিল অবস্থায় ছিল ১৪ সেমি কিন্তু পুরুষটি লম্বায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি আর ১৫২ পাউন্ড ওজন বিশিষ্ট ছিল। শিথিল অবস্থায় সবচেয়ে ছোটো আকারের পেনিসের আকার ছিল ৬ সেন্টিমিটারের সামান্য বেশি। এ পুরুষটির উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি আর ওজন ছিল ১৭৮ পাউন্ড।
যদিও শিথিল বৃহদাকৃতির পুরুষাঙ্গ উদ্রিক্ত অবস্থায় শিথিল অবস্থায় ক্ষুদ্রাকৃতির পুরুষাঙ্গ অপেক্ষা বাড়তি মাত্রায় প্রসারিত হয় এর কোনো অবকাশ না থাকলেও ক্ষুদ্রাকৃতির পুরুষাঙ্গ দিয়ে কতটা সার্থকভাবে সঙ্গম করা যাবে তার তাত্ত্বিক শঙ্কা থাকতে পারে। যদিও ক্ষুদ্রাকৃতির পুরুষাঙ্গ (৯ সেমির কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট্য বৃহদাকৃতির পুরুষাঙ্গ ১০ সেমির বেশি দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট্য) মত সমানভাবে সঙ্গম করা যায়। শিথিল অবস্থায় যে পুরুষাঙ্গ ক্ষুদ্রাকৃতির তা উদ্রিক্ত অবস্থাতেও ক্ষুদ্রাকৃতির থাকে। তাত্ত্বিক পর্যালোচনায় পুরুষাঙ্গের সঙ্গম ক্ষমতার বেলাতে যেটিকে প্রায়ই কোনো গুরুত্ব দেয়া হয় না তা হল- যোনি পুরুষাঙ্গকে ধারণ করে একটা বিশেষ ভূমিকা রাখে। এ সম্পর্কে পরবর্তীতে  আলোকপাত করা হবে।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More