Tuesday, July 5, 2011

বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা ও প্রগতিশীলদের ভাবনা।


ধর্ম প্রবর্তক ও প্রচারকদের চিন্তাজগতের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল নারী পুরুষের যৌন সম্পর্ক। এ ব্যাপারে তারা ছিলেন যার পর নাই উদ্বিগ্ন। ফলশ্রুতিতে ধর্ম গ্রন্থসমূহে এসেছে যৌনতা সম্পর্কিত নানা বিধি নিষেধ। প্রচলিত ধর্মগুলো মানুষের তৃপ্তি ও আকাঙ্খা পুরনের প্রশ্নে উদার নয়। তবুও মানুষ তার সমগ্র শক্তি দিয়ে সৃষ্টির ঊষা লগ্ন থেকেই খুঁজে ফিরেছে যৌন সুখ এবং উপেক্ষা করেছে আরোপিত সকল বিধি নিষেধ। স্বয়ং ধর্ম প্রবর্তকেরাও লঙ্ঘন করেছেন স্বীয় প্রচারিত ধর্মীয় বিধান; হয়েছেন বহুগামী, কখনো কখনো লিপ্ত হয়েছেন বিবাহ বহির্ভূত যৌনতায়! 

কোন কোন ধর্ম শুরুতে যৌনতাকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছিল। যেন যৌনতাই ধর্মের প্রধান শত্রু! কিন্তু সব বাধা ডিঙ্গিয়ে বিজয়ী হয়েছে রিপুর অদম্য তাড়না এবং পরাজিত ও সংশোধীত হয়েছে ওই সকল ধর্মীয় বিধান। বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের প্রশ্নে মোটামুটিভাবে সব ধর্মই কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করে। কোন কোন ধর্ম এরূপ সম্পর্কের ক্ষেত্রে রীতিমত মৃত্যু দন্ডের বিধান আরোপ করেছে এবং পৃথিবীর বহু সমাজে তা আজও প্রতিপালিত হচ্ছে। 

ধর্ম সমূহ সাধারণত কিছু কিছু মানুষের পারস্পারিক আত্মীয়তার সম্পর্কের কারনে তাদের মধ্যকার যৌন সম্পর্ককে নিষিদ্ধ করেছে, এধরনের সম্পর্কের দুজন নর-নারীর মধ্যে বিবাহও নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে আমরা যৌন সম্পর্কে আবদ্ধ হতে দেখেছি মা ও পুত্র, পিতা ও কন্যা, শশুড় ও পুত্রবধূ, জামাতা ও শাশুড়ি, ভাই-বোন সম্পর্কের নর-নারীকেও। 
এমন কোন পারস্পারিক সম্পর্ক পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে সম্পর্কের মধ্যে কখনো কোথাও যৌনতা সংঘঠিত হয়নি। বরং বাস্তবতা হলো এই যে, এধরনের যৌনতা বিশ্বে এখনো বিদ্যমান, বেশ প্রকটভাবেই বিদ্যমান। আর যে সকল পারস্পারিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘বিবাহ নিষিদ্ধ’ হয়নি, সে সকল সম্পর্কের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা খুবই স্বাভাবিক ও প্রচলিত একটা বিষয়- পৃথিবীর সব প্রান্তেই। 

বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা যথেষ্ট রক্ষনশীল। কোন সন্দেহ নেই যে, সামাজিকভাবে এখানে বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা অগ্রহনযোগ্য এবং ক্ষেত্র বিশেষে দন্ডনীয়। আবার একই সাথে অন্য সকল ‘নিষিদ্ধ বিষয়ের’ মত যৌনতা প্রশ্নেও আমাদের সমাজ দারুনভাবে নির্লিপ্ত থাকতে পারঙ্গম। বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা এখানে কেবল চর্চিতই হচ্ছে না, দিন দিন জনপ্রিয়ও হচ্ছে। যৌনতা বিষয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি দ্রুতই পরিবতিত হচ্ছে। প্রেমের সম্পর্ক এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধাবিত হচ্ছে যৌন সম্পর্কের দিকে। এধরনের সম্পর্কে কেবল অবিবাহিত নারী-পুরুষই জড়িয়ে পড়ছে না, তুমুলভাবে জড়িয়ে পড়ছে বিবাহিত নারী পুরুষও। পরকীয়ার কারনে ভেঙ্গে যাচ্ছে অনেক সংসার। স্বামী-স্ত্রীর বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্কের ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার ফলেও ভাঙ্গছে অজস্র সংসার। 

অনেক কথা বললাম। এখন আসল কথায় আসি। যৌন সম্পর্ক সেটা পরকীয়া হোক বা অন্য যে কোন বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কই হোক, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটা আমরা সকলেই কম বেশি জানি। এই পোস্টে আমরা এবিষয়ে ধর্মীয় বিধি বিধানের দিকে যাবো না। আমরা আলোচনা করব একজন প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে আপনি বিবাহ বর্হিভূত যৌনতাকে কিভাবে দেখেন। 

আমি ধরেই নিচ্ছি আপনি নিজেকে একজন আধুনিক ও প্রগতিশীল বলে মনে করেন। এখন নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে আপনার অবস্থান কি?
১) ধরে নিচ্ছি আপনি একজন মুসলিম বংশোদ্ভূত নাস্তিক। একটি মুসলিম মেয়েকে বিয়ের পরে আপনি যদি নিশ্চিত হন যে, বিয়ের আগে আপনার স্ত্রী একজনের সঙ্গে মাস ছয়েক লিভ টুগেদার করেছিল বা তাদের যৌন সম্পর্ক ছিল। সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে? আপনি কি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাবেন? উক্ত পরিস্থিতিতে আপনি কি নিজেকে প্রতারিত মনে করবেন? উত্তর হ্যা/না এর পক্ষে কিছু বলুন।

২) আপনি নাস্তিক নন। ইসলামে বিশ্বাসী এবং নিজেকে আধুনিক ও প্রগতিশীল মনে করেন। নিয়মিত না হলেও মাঝে মাঝেই মসজিদে যান নামাজ পড়তে। আপনি অবিবাহিত এবং এপর্যন্ত অনেক মুসলিম নারীর সাথেই আপনার যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। আপনার ভাইয়ের একজন হিন্দু মেয়ে বন্ধু আছে। তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্কও আছে। তবে তারা পরস্পরকে বিয়ে করতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ নয়। তাদের সম্পর্কটিকে আপনি কিভাবে দেখবেন? এই মেয়েটি হঠাৎই একটি হিন্দু পরুষকে বিয়ে করলো, আপনি কি মনে করেন ওই মেয়েটি তার স্বামীকে বঞ্চিত/প্রতারিত করেছে? আপনার নিজের যৌন সম্পর্কগুলো সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া কি? আপনি কি আপনার স্ত্রীকে বঞ্চিত করেছেন?

৩) বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে একজন নারী বা পুরুষ কি আদৌ তার স্বামী/স্ত্রীকে কিছু বঞ্চিত করে? করলে কিভাবে? 

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More