Friday, July 1, 2011

যৌন প্রবৃত্তি

যৌন প্রবৃত্তি (ইংরেজি: Sexual orientation, সেক্‌শুয়াল্‌ ওরিয়েন্টেইশন্‌) বলতে বোঝায় পুরুষ, নারী, উভয় লিঙ্গ, অযৌন (লিঙ্গ নয় এমন) অথবা অপর কোনো লিঙ্গের পারস্পরিক আবেগ, প্রণয় এবং/অথবা যৌন আকর্ষণজনিত এক স্থায়ী সম্পর্কাবস্থা। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যৌন প্রবৃত্তি বলতে কোনো ব্যক্তির "এই ধরনের আকর্ষণ, আচরণ বা সমজাতীয় সম্রদায়ের সদস্যতার ভিত্তিতে নির্ধারিত ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিচয়"-টিকেও বোঝায়।[১] যৌন প্রবৃত্তির শ্রেণীবিভাজন সাধারণত যৌন আকর্ষণসম্পন্ন ব্যক্তিদের যৌনতা বা লিঙ্গের ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে। যদিও কেউ কেউ অন্যান্য তকমা ব্যবহারের অথবা কোনোটিও ব্যবহারের পক্ষপাতী নয়।[২] যৌন প্রবৃত্তি তিনটি প্রধান বর্গের অধীনে আলোচিত হয়ে থাকে: বিষমকামিতা, সমকামিতা ও উভকামিতা। এছাড়াও আছে রূপান্তরকামিতা, কিংবা উভকামের সমকামিতার মত প্রবৃত্তি [৩]। বিষমকামিতা-সমকামিতা অনবচ্ছেদের এই বিভাগগুলি বিভিন্ন উভকামিতা-বিষয়ক উপবর্গ সহ একান্তভাবে বিষমকামী থেকে একান্তভাবে সমকামী বিষয়শ্রেণী সহকারে বিন্যস্ত। যৌনতত্ত্ববিদরা অবশ্য এই শ্রেণীবিভাজনকে সূক্ষ্ম যৌন পরিচয় চেতনার এক অতিসরলীকরণ বলে মনে করেন।[৪]
যৌন প্রবৃত্তির অধিকাংশ সংজ্ঞাতেই মনস্তাত্ত্বিক উপাদানের কথা বলা হয়ে থাকে। যেমন, নির্দিষ্ট ব্যক্তির কামোদ্দীপনার অভিমুখ, বা আচরণগত উপাদান যা সেই ব্যক্তির যৌনসঙ্গী বা যৌনসঙ্গীদের যৌনতার দিকটি তুলে ধরে। কেউ কেউ সংজ্ঞার মধ্যে উভয় উপাদানকেই সংযোজিত করেন। আবার কেউ কেউ সরলভাবে ব্যক্তিগতভাবে স্ব-সংজ্ঞায়িত বা পরিচয়ভিত্তিক কোনো সংজ্ঞা ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
যৌনতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব ও ইতিহাসের কোনো কোনো বিশারদ মনে করেন বিষমকামী বা সমকামী – এই ধরনের সামাজিক শ্রেণীবিভাগ সার্বজনীন নয়। বিভিন্ন সমাজে যৌনতার থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও বিদ্যমান। যেমন, যৌনসম্পর্কে বয়সবৈষম্য, যৌনসঙ্গীদের যৌনসংগমকালে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা গ্রহণ এবং তাদের সামাজিক মর্যাদা।
যৌন পরিচয় ও যৌন আচরণ যৌন প্রবৃত্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। যদিও তারা পরস্পর পৃথক। পরিচয় বলতে বোঝায় কোনো ব্যক্তির নিজেদের সম্পর্কে ধারণা, এবং আচরণ বলতে বোঝায় কোনো ব্যক্তির নিজস্ব যৌনাচার সম্পর্কিত আচরণ; অন্যদিকে প্রবৃত্তি বলতে বোঝায়, “কল্পনা, স্নেহানুভূতি ও কামনা।” (fantasies, attachments and longings) [৫] কোনো ব্যক্তি তাঁর যৌন আচরণের মাধ্যমে তাঁর যৌন প্রবৃত্তিকে ব্যক্ত করতে পারেন, আবার নাও পারেন।[৬] যে সকল ব্যক্তির যৌনপ্রবৃত্তি সমকামী, কিন্তু তাঁদের যৌন আচরণে তা প্রস্ফুটিত হয় না, তাদের অনেক সময় নিভৃত সমকামী বলে অভিহিত করা হয় [৭]। । যৌন প্রবৃত্তি এমন এক ধারণা যার উদ্ভব হয় শিল্পবিপ্লবোত্তর পাশ্চাত্য জগতে। অন্যান্য দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে তার সার্বজনীনতা বা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তাই বিতর্কের অবকাশ থেকেই যায়।[৮][৯][১০] মিশেল ফুকো লিখেছেন, "'যৌনতা' আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, শিল্পবিপ্লব ও ধনতান্ত্রিকতার এক আবিষ্কার।"[১১] পুরুষ যৌনতার অপাশ্চাত্য ধারণা যৌনতার প্রতি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গী ও যৌন প্রবৃত্তি ব্যবস্থার শ্রেণীবিভাজনের সঙ্গে স্পষ্টত দ্বিমত পোষণ করে।[১২] আবার ‘যৌন প্রবৃত্তি’র যৌক্তিকতা শিল্পবিপ্লবোত্তর পাশ্চাত্য সমাজেও প্রশ্নাতীত নয়।[১৩][১৪]
[সম্পাদনা]

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More