Sunday, July 24, 2011

নারীর যৌন শারীরতত্ত্ব

নারীর বাইরের যৌনাঙ্গের গঠনপ্রণালী এবং অঙ্গসমূহ
Valva and Monspubis
বালিকা ও পূর্ণবয়স্কা নারীদের বহিরাগত যৌনাঙ্গসমূহ প্রায় মানব চক্ষুর অন্তরালে থাকে। একজন বালিকা দেখতে পারে তার শরীরের বহির্গঠনের কিছু অংশ। যেমন তার দুই পাশে দুটো ডিম্বাকৃতি টিস্যু স্তম্ভের অংশ তার বহিরাগত যৌনাঙ্গ ও প্রজননাঙ্গ এই স্থানের মধ্যে থাকে যাকে বলা হয়ে থাকে ভালভা বা যোনিকপাট। একজন পূর্ণ বয়স্কা নারী অথবা বয়ঃসকিালের বালিকা যদি একটি আয়না দিয়ে দেখে তবে সে তার ভালভা দেখতে পারবে। এটা তার যৌনকেশ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। নারীর ভালভার উপরের অংশে থাকে মাংসল চর্বিযুক্ত টিস্যু যেটা তার যৌনাঙ্গ ও শরীরের মধ্যস্থিত প্রজনন অঙ্গকে সুরক্ষা করে। এটাকে বলা হয় Monspubis
ভালভা দেখার সবচেয়ে ভালো পথ হচ্ছে একটা আয়না ধরে নিজেকে নাড়াচাড়া করে এবং ভালভার দুই পাশ টেনে ধরে ভালভা দুটোকে আলাদা করে দেখা। ভালভার মধ্যস্থিত অংশগুলো হচ্ছে-
  • উপরের বা বাইরের ঠোঁট
  • ভেতরের ঠোঁট
  • ভগাঙ্কুর
  • যোনি মুখ বা যোনি
  • দুটি বার্থোলিনগ্রন্থি

লেবিয়া মেজরা ও লেবিয়া মাইনরা
লেবিয়া মেজরা ও লেবিয়া মাইনরা হচ্ছে দুটো ফোল্ডিং করা মাংসের পেশি বা টিস্যু যা ভালভার বহিরাংশে থাকে এবং সে দুটো উরুর সাথে মিশে থাকে। যোনি লোম প্রায়ই গজিয়ে ওঠে লেবিয়া মেজরার উপরে। এটা হয় বয়ঃসকিালে ও তৎপরবর্তী বয়স্কা নারীদের শরীরে। লেবিয়া মেজরার মধ্যে রয়েছে চর্বিযুক্ত টিস্যু, সুতরাং এটা লেবিয়া মাইনরার চেয়ে পুরু। এই চর্বিযুক্ত টিস্যু ভালভার অন্যান্য অংশকে সুরক্ষা করে। আপনি যদি লেবিয়া মেজরাকে উল্টে ধরেন তবে আপনি পরিষকারভাবে তার মধ্যে লেবিয়া মাইনরাকে দেখতে পাবেন।
লেবিয়া মাইনরা ভালভার অভ্যন্তরীণ অন্য অংশগুলোকে সুরক্ষার জন্য তার চারপাশ ঘিরে রাখে। তাদের ওপর যোনি লোম থাকে না। ভেতরে ও বাইরের ঠোঁট দুটো শেষ প্রান্তে গিয়ে মিশে গেছে যেমন উপরের দিকে তেমনি নিচের দিকের ভালভার সাথে। নারীদের লেবিয়ার আকার ও গঠন ব্যক্তি বিশেষে অনেক পার্থক্যপূর্ণ- অর্থাৎ ছোট- বড় হতে পারে, হতে পারে চ্যাপ্টা বা পাতলা।
ভগাঙ্কুর ও ভগাঙ্কুরের হুড
ভগাঙ্কুর ভালভার উপরিভাগে অবস্থিত। এটা যেখানে দুটো লেবিয়া এসে মিশেছে তার কোমল ফোল্ডের মধ্যে অবস্থান করে। এটা নারীর যৌনাঙ্গের মধ্যে অত্যন্ত মূল্যবান অঙ্গ। এটাকে ইংরেজিতে বলে ‘ক্লাইটোরিস’ বাংলা ‘ভগাঙ্কুর’। ভগাঙ্কুরের একমাত্র কাজ হচ্ছে বালিকা ও পূর্ণবয়স্কা নারীদের যৌন আনন্দ দেয়া। ভগাঙ্কুরের মাথাকে বলে গ্ল্যান্স। এক নারীর থেকে অন্য নারীর ভগাঙ্কুরের পার্থক্য থাকে তবে তারা প্রায়ই একই সাইজের হয়ে থাকে। যে স্যাফটটি ভগাঙ্কুরের গ্ল্যান্সকে সাপোর্ট দিয়ে রাখে তা ‘দুটো পায়ে’ বিভক্ত। সেগুলো নারীর শরীরের মধ্যে থেকে যোনির দুই পাশে পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে থাকে। স্যাফট এবং গ্ল্যান্সগুলো ভগাঙ্কুরের উপরে ‘ক্লইটরিয়াল হুড’ দ্বারা ঢাকা থাকে। ভগাঙ্কুরের গ্ল্যান্সগুলো অত্যধিক সপর্শকাতর ও যৌন সংবেদনশীল। সপর্শ করলেই তা সজীব হয়ে ওঠে। ভগাঙ্কুরের মধ্যে এক ধরনের টিস্যু আছে যাকে বলা হয় ‘করপাস কভারনোসা টিস্যু’ যার কারণে যৌন আচরণের সাথে তাতে রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়ে ক্লাইটেরিস ফুলে ওঠে।
নারীদের খতনা
নারীদের খতনা করানো হয়ে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা, মিডল ইস্ট এবং দক্ষিণ এশিয়ার কোনো কোনো দেশে। আমেরিকাতে হয়ে থাকে ওইসব দেশের বসতি স্থাপনকারী নারীদের মধ্যে। যারা এখনো তাদের পুরনো সংস্কৃতিকে ধারণ করে আছেন। নারীদের খতনা করা হয় ভগাঙ্কুরের হুড বা মাথা কেটে ফেলে। কখনো কখনো পূর্ণ ক্লাইটোরিস ও লেবিয়াও কেটে ফেলা হয়।
নারীদের খতনার অভ্যাস চালু রয়েছে সংস্কৃতির কারণে। এটা প্রায়ই হয়ে থাকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। যার দ্বারা অত্যন্ত মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এর দ্বারা যৌন সপর্শকাতরতা কমে যায়। এসব কারণে এই অভ্যাসকে ব করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আন্দোলন চলছে। নারীর খতনাকে ইংরেজিতে প্রায়ই বলা হয়ে থাকে Clitoridectomy or FGM. খতনা করার স্বপক্ষে কোনো স্বাস্থ্যগত বা মেডিকেল কারণ নেই। যদিও এর পরেও তারা যৌন জীবন যাপন করতে পারেন। যেসব নারীর খতনা করা হয় তারা অন্যদের মতো একই ধরনের ভগাঙ্কুরের অনুভূতি যৌনমিলনের সময় পায় না।
ইউরেথ্রার মুখ
বালিকা ও নারীদের শরীরে প্রস্রাবের নালির মুখটি অবস্থিত হয় ভগাঙ্কুরের নিচে এবং যোনি মুখের উপরে। প্রস্রাবের নালীর মুখ দেখা সহজ নয় কারণ এটা থাকে দুটো ভালভা এরিয়ার মধ্যে লুকানো। অনেক বালিকা ভুলবশত বিশ্বাস করে যে, তাদের প্রস্রাব আসে যোনি নালীর মধ্য দিয়ে। অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা ইউরেথ্রার কাজ নিয়ে বিভ্রান্ত হতে পারে। প্রস্রাবের নালী বা ইউরেথ্রা নারীদের প্রজনন সিস্টেমের অংশ নয়। এর সম্পূর্ণ কাজ হচ্ছে প্রস্রাবের থলে থেকে প্রস্রাবকে বের করে বাইরে ফেলে দেয়া।
যোনিমুখ
যোনিমুখকে ইংরেজিতে বলে ‘ভ্যাজাইনাল ওপেনিং’। সরাসরি প্রস্রাবের নালীর মুখের নিচেই যোনিমুখ।
 যোনিমুখের চারপাশের টিস্যুকে বলা হয় introitus। যোনিমুখের রয়েছে তিনটি জরুরি কাজ।
  • এটা নারীর রজঃস্রাব বের করার পথ, যা তার শরীর থেকে নির্গত হয়
  • যোনির মাধ্যমে যৌন সঙ্গমের সময় এর মধ্যে শিশ্নকে প্রবেশ করানো হয়
  • এই নালীর ও যোনিমুখের মধ্য দিয়ে সন্তান প্রসব লাভ করে।
বার্থোলিনস গ্ল্যান্ড
যোনিমুখের দুই পাশে দুটো অভ্যন্তরীণ গ্ল্যান্ড রয়েছে লেবিয়া মাইনরার মধ্যে, তাদেরকে বলা হয় বার্থোলিনস গ্ল্যান্ডস। এরা নারীর যৌন উত্তেজনার সময়ে এক প্রকার তরল রস নিঃসরণ করে যেটা নারীর যোনিকে পিচ্ছিল করে দেয়।
স্তনযুগল
নারীর স্তনযুগল হচ্ছে খুব জরুরি শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক আনন্দের উৎস। পৃথিবীর প্রায় সব সংস্কৃতিতে তারা নারীদের আকর্ষণের প্রধান উপাদান বলে গণ্য হয়। স্তন দুটোর উত্তেজনা যৌনমিলনের সময় নারীকে প্রচুর আনন্দ দিতে পারে। নারীর স্তন দুটো শিশু জন্মদানের পর তার জন্য দুধ তৈরি করে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। অনেক মা শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় একটা সুখের অনুভূতি লাভ করেন।
স্তনের সর্বাগ্রে রয়েছে স্তনের চূড়া বা নিপল। নিপলের মধ্যে রয়েছে ছিদ্র যার মধ্য দিয়ে বুকের দুধ প্রবাহিত হয়। নিপলের চারপাশ ঘিরে রয়েছে এরিওলা। নিপল এবং এরিওলা এক ধরনের টিস্যু দ্বারা এবং পেশি দ্বারা তৈরি যা ঠাণ্ডার সময় কুঁচকে যায়, যৌন জাগরণের সাথেও কুঁচকে যায়। এটা পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। স্তনের মধ্যে এক ধরনের বিশেষ কোষের মধ্যে দুধ তৈরি হয়- সেগুলোকে বলা হয় Alveoli sacs। এই স্যাক্সগুলো একসাথে দলবদ্ধ হয়ে থাকে যে এরিয়ার মধ্যে তাকে বলা হয় Lobes। এই কোষগুলো স্যাকস ও লোবেলসগুলো দুধ তৈরি করতে শুরু করে একজন নারী গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই। এই সময়ে শরীর এক ধরনের হরমোন তৈরি করে যা দুধ তৈরিকে উত্তেজিত করে। বাচ্চা যখন গর্ভের বাইরে চলে আসে নারী তখন আর গর্ভবতী থাকে না। তখন দুধ চলে আসে দুধের গর্তের মধ্যে। এগুলোকে বলা হয় Milk ducts। এগুলো হচ্ছে এক ধরনের টিউবের মতো খাঁচা যার সংযোগ রয়েছে নিপলের সাথে। শিশু যখন মায়ের নিপলে চোষা দেয় তখন সেই গর্ত থেকে দুধ নিপলের মধ্যে চলে আসে এবং শিশু স্বাচ্ছন্দ্যে দুধ পান করে।
নারীর অভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ এবং প্রজনন অঙ্গ
এই অঙ্গসমূহের মধ্যে রয়েছে নিম্নোক্তগুলো-
  • যোনি বা ভ্যাজাইনা
  • গ্রীবা বা সার্ভিক্স
  • জরায়ু বা ইউটেরাস
  • জরায়ু নালী বা ফেলোপিয়ান টিউব
  • ডিম্বাশয় বা ওভারিস
এসব অঙ্গসমূহ একটি হাড়ের ও পেশির দ্বারা সাপোর্ট দেয়া আছে। সে কাঠামোটাকে বলা হয় Pelvic girdle. নারী-পুরুষ উভয়েরই পেলভিক গার্ডেল আছে। নারীদের শরীরে এটা বেশি উন্নত এবং চওড়া, কারণ গর্ভধারণের সময় এটাকে ভ্রূণের ভার সহ্য করতে হয়। এই কারণেই বালিকা ও নারীদের উরু বা নিতম্ব পুরুষের নিতম্বের চেয়ে প্রায়ই চওড়া হয়।
যোনি
যোনি হচ্ছে নারীদের যৌনাঙ্গ যা বাইরে থেকে ভেতরের প্রজনন অঙ্গসমূহের সাথে মিলিত করে। যোনির মুখ হচ্ছে দুটি কপাটিকার মাঝখানে, প্রস্রাবের নালীর নিচে। যোনি হচ্ছে একটি নরম পিচ্ছিল শিথিল পথ যা হচ্ছে ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা। এর শিথল অবস্থায় নরম ভেজা ভেজা গর্তটির দুই পাশ এসে অন্যের সাথে মিশে থাকে যেমন বায়ুহীন বেলুন থাকে। বেলুনের মতো যোনিরও ক্ষমতা আছে তা অনেক বেশি বড় হয়ে যেতে পারে।
শিথিল যোনি যৌন সঙ্গমের সময় শিশ্নকে ধারণ করতে পারে এবং শিশুজন্মের সময় ভ্রূণ বা বাচ্চার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। যোনিকে আবার জন্মনালীও বলা হয়। জন্মের সময় শিশু জরায়ুর গ্রীবা থেকে চলতে শুরু করে এবং যোনি নালীর মধ্য দিয়ে এসে নারীর শরীরের বাইরে চলে আসে। রজঃস্রাবের সময় রক্ত এবং টিস্যু এই পথ দিয়েই বেরিয়ে আসে।
হাইমেন বা সতীচ্ছদ
চামড়ার একটি পাতলা পর্দা যোনি মুখের উপরে থাকতে পারে, যাকে বলা হয় সতীচ্ছদ। ইংরেজিতে তাকে বলে হাইমেন। এর মধ্যের ক্ষুদ্র জালির মতো ছিদ্র রজঃস্রাবকে বাইরে চলে আসতে দেয়। প্রায় সব মেয়েই সতীচ্ছদ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে। অনেকের আবার জন্মকাল থেকেই সতীচ্ছদ থাকে না। সতীচ্ছদের অবস্থা তিনটি কারণে যৌন কৌমারিত্বের জন্য ভালো বলে প্রদর্শিত হয় না।
  • একটি বালিকা শিশুকালেই সতীচ্ছদ ছাড়া জন্ম নিয়ে থাকতে পারে
  • দৈনন্দিন দৌড়াদৌড়ি খেলাধুলা ও শারীরিক ব্যায়ামের সাথে সতীচ্ছদ অতি সহজেই ছিদ্র হয়ে যেতে পারে
  • অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত পোশাক যন্ত্র ব্যবহারের কারণেও সতীচ্ছদ ছিদ্র হয়ে যেতে পারে।
জি স্পট
যোনি নালীর মধ্যে একটি স্থান আছে যাকে বলা হয় গ্রাফেনবার্গ স্পট বা জি স্পট। এটা যোনিমুখ থেকে এক বা দুই ইঞ্চি ভেতরে যোনি প্রাচীরের সাথে যা নাভীমুখের সঙ্গে মিলিত থাকে। জি  স্পট যৌনতার জন্য খুবই সপর্শকাতর এবং যৌন সঙ্গমের সময় কিছুটা ফুলে ওঠে।
কৌমারিত্ব ও সতীচ্ছদ
অনেক লোকের কাছে সতীচ্ছদ হচ্ছে একটি জরুরি কৌমারিত্বের চিহ্ন। তারা বিশ্বাস করে যে, যে নারীর সতীচ্ছদ ছেঁড়া থাকে তার যোনিতে কোনো বালক বা পুরুষ তার শিশ্ন প্রবেশ করিয়েছে। কিন্তু তা সব সময় সত্য নয়। তার কারণ অনেক নারী হাইমেন ছাড়াই জন্মগ্রহণ করে। অন্যান্য অনেকেই খেলাধুলার ও ব্যায়ামের কারণে সতীচ্ছদ ছিঁড়ে যায়। হাইমেন ছিদ্র হওয়ার কারণে কিছু রক্তপাত ঘটতে পারে।
খেলাধুলার মতো সাধারণ কারণে যেমন ঘোড়ায় চড়া বা বাইসাইকেল চড়ায়ও সতীচ্ছদ ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। একজন কনের কৌমারিত্বের অনেক বেশি মূল্য দেয়া হয় অনেক সংস্কৃতিতে, যারা বিশ্বাস করে যে একজন নারীর যৌনসঙ্গী হতে পারে একমাত্র তার স্বামীই। যৌন সঙ্গমের সময় রক্তপাত হলেই বিশ্বাস করা হয় যে এটা নারীর কৌমারিত্বের লক্ষণ। এসব সংস্কৃতিতে বিবাহের প্রথম ফুলশয্যার রাত শেষে কৌমারিত্ব পরীক্ষার জন্য দম্পতির বিছানার চাদরে রক্ত লেগে আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। যদি রক্ত দেখা যায় তবে নারীটিকে বিবেচনা করা হয় যে তার কৌমারিত্ব ঠিক আছে। যাই হোক একজন নারীর প্রথম যৌনসঙ্গমের পরে রক্তপাত না হলেও তিনি কুমারী বা তার কৌমারিত্ব সঠিক থাকতে পারে।
প্রস্রাবের নালী
প্রস্রাবের থলি থেকে প্রস্রাব এই নালীর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে এবং প্রস্রাবের নালীর মুখ দিয়ে শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। বালিকা ও নারীদের প্রস্রাবের নালী বালক ও পুরুষের প্রস্রাবের নালী থেকে অনেক ছোট। কারণ পুরুষদের মতো নারীদের শিশ্ন নেই এবং তাদের প্রস্রাবের নালী তাদের মতো বাইরেও আসে না।
স্কেনেস গ্ল্যান্ডস
দুটো স্কেনেস গ্ল্যান্ড থাকে শরীরের মধ্যে প্রস্রাবের নালীর দুই পাশে। তাদের মুখ প্রস্রাবের নালীর সাথে। নারীদের জি সপটের উত্তেজনা বৃদ্ধি হলে স্কেনেস গ্ল্যান্ডস থেকে তরল রস ক্ষরণ হয় এবং এর দ্বারা নারীদের বীর্যপাত হতে পারে।
জরায়ু
জরায়ু হচ্ছে নারীর গর্ভে অবস্থিত নাশপাতির আকারের একটি প্রজনন অঙ্গ। যাকে সাধারণত মাতৃগর্ভ বলা হয়। এটা শক্তিশালী পেশির দেয়াল দিয়ে গঠিত হয় এবং তার গঠন হয় একজন নারীর মুষ্টি হাতের মতো।
জরায়ুর নিম্নাংশের চিকন ভাগ বা জরায়ুর গ্রীবাকে সারভিক্স বলে। প্রায় অর্ধেকের মতো সারভিক্স যোনি নালীর মধ্যে অবস্থান করে। সারভিক্সের একটি মুখ যাকে বলা হয় OS, যেটা একটা সংযোগ নালী, যা জরায়ুর ভেতর থেকে যোনি পর্যন্ত সংযোগ দেয়। এর সবচেয়ে চিকন অংশ হচ্ছে সারভিক্সের মুখ যা একটা পেন্সিলের শিষের মতো চওড়া।
সারভিক্সের মধ্য দিয়ে রজঃস্রাব প্রবাহিত হয়ে যোনির মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। বাচ্চা প্রসবের সময় সারভিক্সের আকার বেলুনের মতো প্রসারিত হয়ে যায়। যৌন সঙ্গমের সময় শিশ্নটি সারভিক্সের মধ্যে প্রবেশ করে না। শিশ্নটি সারভিক্সের মুখে আঘাত করতে পারে, যা কোনো কোনো নারীর জন্য আনন্দদায়ক হয়। অনেকে আবার এর উপরের আঘাতকে অস্বস্তিকর বলে মনে করেন। জরায়ুর মধ্যের গঠনটি একটি ত্রিভুজ আকারের স্থান। এটাকে ঘিরে আছে মোটা টিস্যুর দেয়াল ও রক্তপ্রবাহ। এর লাইনিংকে বলা হয় endometrium। নারী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর এটা হয়ে যায় উর্বর ডিমের জন্য পাখির বাসার মতো।
এন্ড্রোমেট্রিয়াম বিশেষভাবে মাসের মধ্যে কয়েকদিনের জন্য খোলা থাকে। যদি নারীর একটি ডিম্ব উর্বর হয় এই সময়ের মধ্যে তবে সেটা সরে এসে জরায়ুর দেয়ালে এন্ড্রোমেট্রিয়ামের সাথে লেগে যায়। এটা হয়ে গেলে গর্ভধারণ শুরু হয়ে যায় এবং এন্ড্রোমেট্রিয়াম সেই উর্বর ডিম্বটিকে সেবা-শুশ্রূষা শুরু করে বা ভ্রূণকে সেবা দান করে। যদি ফার্টালাইজেশন বা উর্বরতা না ঘটে অথবা যদি ভ্রূণ দেয়ালের সাথে না লেগে যায় তবে অন্তর্জরায়ুর অন্তবেষ্টিক বা এন্ড্রোমেট্রিয়াম ভেঙে ভেঙে স্রাব আকারে যোনির মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। এটাকেই রজঃস্রাব বা মেনস্ট্রুয়েশন বলে।
যদি গর্ভধারণের উন্নতি হয় এবং ভ্রূণ বাড়তে থাকে তবে প্রি-এমব্রায়ো বেড়ে গিয়ে পূর্ণ ভ্রূণে পরিণত হয়। যখন ভ্রূণ বড় হয়ে শরীরে বাইরে আসার সময় হয়, জরায়ুর পেশিগুলোতে খিঁচুনি হয় যাকে বলা হয় লেবার পেইন, এটা হচ্ছে জরায়ুর ভেতর থেকে ভ্রূণকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া। তখন সারভাইক্যালের মুখ খুলে প্রশস্ত হয়ে যায় এবং OS আরো নিচে নেমে যোনি পর্যন্ত চলে আসে। তখন যোনির মুখ দিয়ে সন্তান শরীরের বাইরে চলে আসে।
ডিম্বাশয়
২টি ডিম্বাশয়ের মধ্যে নারীদের শরীরে ডিম্ব তৈরি হয় যখন তারা সাবালিকা হয়। ডিম্বাশয় দুটো তলপেটের দুইপাশে অবস্থিত থাকে। যদি আপনি অনুভব করতে চান যে ডিম্বাশয় দুটো কোন স্থানে আছে তাহলে আপনার একটি আঙুল নাভির উপরে রাখুন এবং সরাসরি আঙুলটি টেনে এনে পায়ের উপরের অংশে লাগান। যখন আপনার আঙুলটি এই পথের অর্ধেক পর্যন্ত এসেছে তখনই আপনার আঙুলটি ডিম্বাশয়ের উপরে আছে। প্রত্যেক পাশে একটি ডিম্বাশয় আছে একটি ডান পাশে একটি বাম পাশে। প্রত্যেকটি অভারি একটা আলমন্ড বা আলুবোখারা বা বাদামের মতো। একটি শিশু বালিকার ডিম্বাশয়ের মধ্যে জন্মের সময় এক মিলিয়ন অপরিপক্ব ডিম থাকে।
জি স্পট এবং নারীর বীর্যস্খলন
মনে করা হয় যে জি সপট নারীর যৌন উত্তেজনা ও নারীর বীর্যপাতকে প্রভাবিত করে। একসময়ে বিশ্বাস করা হতো যে একমাত্র প্রস্রাবই চলাচল করে নারীদের প্রস্রাবের নালীর ভেতর দিয়ে। যাই হোক গবেষকগণ অধুনা গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন যে, এর মধ্য দিয়ে নারীদের বীর্যপাত ঘটে। কোনো কোনো মেয়েলোকের যৌন উত্তেজনা এবং চরমপুলকের সময় ইউরেথ্রার মধ্য দিয়ে তীব্র বেগে বীর্যস্খলন ঘটে। কিছু কিছু নারীর মধ্যে এই তরল পদার্থটি শুধু প্রস্রাব এবং বীর্য নয়। অন্য নারীদের ক্ষেত্রে এই তরল পদার্থটি পুরুষদের প্রোস্টেটের মধ্যে তৈরি তরল পদার্থের মতো। এটা ধারণা করা হয় যে, প্রায় ১০% মেয়েলোক এই ধরনের বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা লাভ করে থাকে।
ফেলোপিয়ান টিউব
একটি করে ফেলোপিয়ান টিউব জরায়ুর দুই পাশের সাথে ও ডিম্বাশয়ের সাথে যোগ করা থাকে। যার মধ্য দিয়ে ডিম্ব চলে এসে জরায়ুতে পড়ে। এই টিউবটির একমাথা খোলা থাকে জরায়ুর মধ্যে অন্য মাথা খোলা থাকে ডিম্বাশয়ের অত্যন্ত কাছে। যখন একটি ডিম ছাড়া হয় তখন ডিমটি অতি সহজে ফেলোপিয়ান টিউবের খোলা মুখে প্রবেশ করতে পারে। প্রত্যেকটি টিউবের মাথায় সুন্দর চুলের মতো ফ্রিনজেস আছে, যেটা একটি পাকাপোক্ত ডিমকে টেনে ওভারি থেকে টিউবের মধ্যে নিয়ে আসে। ফেলোপিয়ান টিউবের সংকোচন ও সিলিয়ার নড়াচড়ার কারণে ডিমটি সরে এসে জরায়ুর মধ্যে প্রবেশ করে।
সাধারণত ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্যেই শুক্রকীট ও ডিমের মিলন হয়। শুক্রকীটগুলো প্রথমে বীর্যের সাথে যোনি নালীর মধ্যেই জমা হয়, তারপর সেগুলো সারভিক্সের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার সাঁতার শুরু করে এবং জরায়ুর মধ্য দিয়ে গিয়ে ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্যে প্রবেশ করে। যদি একটি ডিম শুক্রকীটের দেখা পায় এবং তার সাথে মিলিত হয়ে তাকে গ্রহণ করে, তবেই তাকে ফার্টিলাইজেশন বা উর্বরতা বলা হয়। ডিম বা ডিম্ব হচ্ছে মানব দেহের সর্ববৃহৎ কোষ। এটা ‘i’ এর উপরের ডটের মতো আকারের। ডিমগুলো ডিম্বাশয়ের মধ্যে জমা থাকে। যে স্থানটিতে ডিম থাকে তাকে বলা হয় follicles। প্রত্যেকটি ফলিকেলের মধ্যে এক একটি অপরিপক্ব ডিম থাকে। প্রত্যেক মাসে অনেকগুলো ফলিকেলের জন্ম হয়। মাত্র একটি বা দুটো ডিম পরিপক্ব হয়ে প্রতিমাসে সেখান থেকে মুক্ত হয়ে বেরোয়। বছরের যে কোনো সময়ে এই ডিম্ব ক্ষরণ ও তার শুক্রকীটের সাথের মোলাকাত হলেই একজন নারী গর্ববতী হয়। এই প্রসেসকে বলা হয় Ovulation এবং এটা শুরু হয় সাবালিকা হওয়ার পর।
ডিম্বাশয়ের মধ্যে হরমোনও তৈরি হয়, যা ডিম্বক্ষরণের জন্য প্রয়োজন হয় এবং প্রয়োজন হয় একটি বালিকার সাবালিকা হওয়ার জন্য বৃদ্ধিতে। ডিম্বাশয়ের মধ্যে যে হরমোন তৈরি হয় তা হচ্ছে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরোন। এগুলো অন্যান্য হরমোন যা ডিম্বক্ষরণকে প্রভাবিত করে। জরায়ু পর্যন্ত ডিম চলাচলের পথকে এবং সর্বশেষে প্রত্যেক মাসে রজঃস্রাবের মাধ্যমে জরায়ুর মধ্যে লাইনিংগুলোকে শেষ করাকেও প্রভাবিত করে। এই ছাঁচকে বলা হয় রজঃস্রাব চক্র বা menstrual cycle। এটাও একজন নারীর গর্ভধারণ অবস্থায় হয় না, তবে তার সারা জীবনভর প্রজনন ক্ষমতার সময়কাল পর্যন্ত চলতে থাকে। কিছু কিছু নারী অনুভব করতে পারেন যে, তাদের ডিম্বাশয় ডিম্বক্ষরণের সময় কিছুটা নরম হয়েছে। এটার ডাক্তারি নাম হচ্ছে Mittes chmerz. নারীরাই অনুর্বর ডিম্ব ঝরে যাওয়ার ও জরায়ুর লাইনিং ক্ষরণ হওয়ার বিষয়ে সজাগ থাকে। এই মাসিক ঘটনাকে বলা হয় রজঃস্রাব।
রজঃস্রাব
রজঃস্রাব চক্রকে নাম দেয়া হয়েছে একজন নারীর শরীরের হরমোন ওঠানামা করার প্রক্রিয়াকে বোঝানোর জন্য। যার কারণে নারীর অন্তর্জরায়ুর মধ্যে রক্ত জমা হয় ও ক্ষরণ হয়। এই চক্রের অংশবিশেষকে যখন নারীর গর্ভবতী হওয়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা থাকে বলা হয় উর্বর সময়। এটা সাধারণত শুরু হয় ডিম্বক্ষরণের ছয় দিন পূর্ব থেকে। এই চক্রের অন্য সময়ে তার গর্ভধারণ করার সুযোগ অনেকটা কম থাকে এবং এই সময়টায় নারী অনেক কম উর্বর বা অনুর্বর থাকেন।
Menarche, ঋতু আরম্ভের কাল। এটা হচ্ছে সেই সময় যখন প্রথম রজঃস্রাব শুরু হয় এবং Menopause সংজ্ঞাটি ব্যবহার করা হয় রজঃস্রাব চক্রটি শেষ হওয়ার পথে যখন সর্বশেষ রজঃস্রাব হয়। প্রত্যেকটি নারীর শরীরই আলাদা এবং এই ঘটনাগুলো প্রত্যেক নারীর মধ্যে একই বয়সে ও সময়ে ঘটে না। সাধারণত মেয়েদের ৯ বছর বয়স থেকে ১৪ বছরের মধ্যে রজঃস্রাব শুরু হয় এবং মেনোপজ ঘটে ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে।
একজন নারী যদি জানে যে, তার রজঃস্রাব চক্র কী করে হয় তা তাকে বুঝতে সাহায্য করবে কীভাবে উর্বরতা এবং গর্ভধারণ সংঘটিত হয় এবং কীভাবে গর্ভ পরিকল্পনা করা অথবা গর্ভধারণ পরিহার করা যায়। রজঃস্রাবের প্রথম দিন থেকে পরবর্তী রজঃচক্র স্রাবের প্রথম দিন পর্যন্ত এক রজঃস্রাব চক্র। এই চক্রের দৈর্ঘ্য এক এক নারীর জন্য এক এক রকম এবং তা এক মাস থেকে অন্য মাসে পরিবর্তিতও হতে পারে। একটি বিশেষ ধরনের রজঃস্রাব চক্র দীর্ঘায়িত হতে পারে ২১ থেকে ৩৫ দিন পর্যন্ত। রজঃস্রাব চক্র নির্ভর করে একটি ডিম্বের ডিম্বকোষ থেকে নিঃসরণের পর তার কী অবস্থা হয়, তার উপরে। এর দুটো স্তর আছে- ডিম্বক্ষরণের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী অবস্থাসমূহ। এই সমস্তটা আশ্চর্য ঘটনা মস্তিষেকর মধ্যে অবস্থিত একটি ছোট গ্রন্থি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়; তাকে বলা হয় পিটুইটারি গ্ল্যান্ড। পিটুইটারি গ্ল্যান্ডের মধ্যে একপ্রকার তরল রস তৈরি হয় তাকে বলে হরমোন। সেই হরমোন ডিম্বাশয় ও জরায়ুকে উত্তেজিত করে নারীর রজঃস্রাব চক্রের মাধ্যমে। চারটি হরমোন যা রজঃস্রাব চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে তা হচ্ছে-
  • প্রোজেস্টেরন (Progesterone)
  • L. H (Iuteinizing hormone)
  • F. S. H (Follicle Stimulating hormone)
রজঃস্রাবের প্রথম চক্র যোনি থেকে ১ম দিনের রক্ত ও টিস্যু নির্গমনের মুহূর্ত থেকে চিহ্নিত হয়। প্রথম দিন হচ্ছে গত মাসের ক্ষরিত ডিম্বটির কী অবস্থা হয়েছে তারই ফলাফল। যদি ক্ষরিত ডিম্বটি উর্বর না হয়ে থাকে, তবে যে এন্ড্রোমেট্রিয়াম উর্বর হওয়া ডিম্বটিকে অভ্যর্থনার জন্য তৈরি হয়েছিল সেগুলো ঝরে যাবে। একবার এটা হয়ে গেলে নতুন করে আবার প্লাস টিস্যু লাইনিং জরায়ুর মধ্যে তৈরি হবে নতুন আর একটি ডিম্বকে গ্রহণের জন্য।
পুরাতন লাইনিংয়ের ঝরে যাওয়াকে বলা হয় রজঃস্রাব বা তার পিরিয়ড চলছে। এটা দুদিন থেকে সাতদিন পর্যন্ত চলতে পারে। যে টিস্যুগুলো ঝরে যায় তাকে বলা হয় রজঃ বা রজঃস্রাবের প্রবাহ, কারণ এটা শরীরের বাইরে প্রবাহিত হয়ে যায়। রজঃস্রাব প্রবাহিত হয় সারভাইক্যাল-এর মুখ দিয়ে নিচের যোনির দিকে এবং যোনি মুখের মধ্য দিয়ে শরীরের বাইরে চলে যায়। রজঃস্রাবের মধ্যে রয়েছে তরল রস, টিস্যু, তিন থেকে চার টেবিল চামচের মতো রক্ত। যখন বালিকারা তাদের প্রথম রজঃস্রাব চক্র শুরু করে তারা রক্ত দেখে ঘাবড়ে যেতে পারে। এর কারণ পূর্বে তাদের যত রক্ত দেখার অভিজ্ঞতা ছিল তা ছিল কোনো কাটা ছেঁড়ার বা অসুস্থতার রক্ত দেখার। অনেকের বিশ্বাস যে এই রক্তটা অপরিষকার, ময়লা এবং অস্বাস্থ্যকর। এটা সত্য নয়। এই রক্তস্রাবের ব্যাপারটা একটা স্বাস্থ্যকর শরীরের চিহ্ন।
অনেক সময় রজঃস্রাবের রক্ত দেখা যায় বেগুনি রঙের, কিছু নারী তা দেখে চিন্তিত হয়। বেগুনি রক্তের প্রবাহ সঠিকভাবে স্বাভাবিক হতে পারে এটা তখনই দেখা যায়, যখন রক্তের প্রবাহ হয়, তরুণ বালিকা সাধারণত পিরিয়ডের প্রথম অথবা শেষের দিকে এরূপ হয়ে থাকে। এটা বেগুনি হওয়ার কারণ রক্তকে গর্ত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে খুব তাড়াতাড়ি টেনে বের করে আনা হয়নি, যখন রজঃস্রাব ধীরে ধীরে প্রবাহিত হতে থাকে, তারা যোনি প্রদেশ ত্যাগ করার পূর্বেই বেগুনি রঙ ধারণ করতে পারে।
যোনির নিচে যখন সেনেটারি প্যাড বা তোয়ালে ব্যবহার করা হয় অথবা নিচলবাসের সাথে থাকে, তা যোনির নিচে এমনভাবে মিশে থাকে যে রক্ত বের হওয়ার সাথে সাথে তা চুষে নেয়। এগুলো এমন সপঞ্জিও পদার্থে তৈরি হয় যে, সেগুলো রক্তের প্রবাহকে গ্রহণ করে নেয় এবং জামা কাপড় খারাপ হওয়া থেকে বাঁচায়। পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার একটু পরেই একজন নারীর শরীরে একটি ডিম্ব ডিম্বাশয় ত্যাগ করার জন্য তৈরি হয়ে যায়। মস্তিষেকর মধ্যস্থিত পিটুইটারি গ্রন্থি FSH (follicle stimulating hormine) ছাড়তে শুরু করে যেটা ডিম্বাশয়ের মধ্যস্থিত folliclcs কে উত্তেজিত করে। সাধারণত একটি ফলিকেল পাকাপোক্ত হয় এবং সেই ফলিকেলের মধ্যের ডিম্বটি পাকাপোক্ত হয়ে সুগঠিত হয়। পরিপক্বতা প্রাপ্তিকালে ফলিকেলটি একটি হরমোন তৈরি করে, যাকে বলা হয় এস্ট্রোজেন। এস্ট্রোজেন একটি বার্তা প্রেরণ করে যা এন্ড্রোমেট্রিয়ামকে রক্ত ও টিস্যুর দ্বারা পুরু করে। ডিমটি কবে রিলিজ হবে সেই দিনটি জানা খুবই কষ্টকর। কারণ এটার ক্ষরণ আগে-পিছে হতে পারে।
তবে ২৮ দিনের চক্রের মধ্যে রজঃস্রাবের পরের ১৩ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে একটি নতুন ডিম ক্ষরণ হবে। ডিম্বাশয় থেকে নতুন ডিম ক্ষরণকে বলা হয় ডিম্বক্ষরণ বা ওভালুয়েশন। এটা লেটিনাইজিং হরমোন-এর একটি তরঙ্গ থেকে ঘটে থাকে, যাকে পরিচালনা করে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড। যদিও এটা বলা কষ্টকর যে, কবে কখন একটি ডিম ক্ষরণ হবে, তবে আমরা জানি যে ডিমটি রিলিজ হওয়ার পরে পরবর্তী রজঃচক্রের প্রথম দিন আসতে আর ১৪ দিন লাগবে। এটা সব ধরনের নারীর ঋতুচক্রের জন্য সত্য। তাতে তাদের চক্র হতে পারে ২১ দিনের বা ৩৫ দিনের দীর্ঘ। ডিম্বকোষের ফলিকেল দ্বারা যখনই ডিমটি ক্ষরিত হয়ে যায় তখন এটাকে টেনে ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জরায়ুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। যে ফলিকেল ডিম্বটিকে ক্ষরণ করে দেয় সেটি ডিম্বকোষের মধ্যে থেকে যায়। এটাকে বলা হয় Corpus luteumh. এটা ধারাবাহিকভাবে এস্ট্রোজেন তৈরি করতে থাকে এবং প্রোজেস্টেরন তৈরি করতে শুরু করে, যা জরায়ুর মধ্যে লাইনিং তৈরি করতে সাহায্য করে।
ডিম্ব ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্য দিয়ে জরায়ুর দিকে চলতে শুরু করে। যাত্রাপথে একটি ডিম্ব একটি শুক্রকীটের সাথে মিলে গিয়ে ডিম্বটিকে উর্বর করে তোলে। যদি উর্বরতা ঘটে যায় তখন উর্বর কোষটি জরায়ুর দেয়ালের সাথে লেগে যায়। যদি উর্বরতা না ঘটে তবে ইউটেরাসের লাইনিংগুলো ভাঙতে শুরু করে। জরায়ুর লাইনিংগুলো ভেঙে যায়। এটা জরায়ুর মধ্য থেকে বের হয়ে যায়। সারভিক্সের মধ্য দিয়ে যোনি নালী হয়ে যোনি মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। এটাই হলো পরবর্তী চক্রের প্রথম দিন এবং তা চিহ্নিত হয় রজঃস্রাব প্রবাহের দ্বারা। তারপর সম্পূর্ণ প্রোসেসটি পুনরায় শুরু হয়।
রজঃস্রাব চক্র চলতেই থাকে যতদিন পর্যন্ত একজন নারীর বয়স ৪৫ থেকে ৫৫ বছর না হয় এবং মেনোপজ স্তরে না পৌঁছায়। মেনোপজের পরে কোনো ডিম্ব পরিপক্ব হয় না এবং ফলিকেলস হরমোন তৈরি ব করে দেয়। সুতরাং হরমোন পরিবর্তনের চক্র বাধাপ্রাপ্ত হয়। এটা একজন নারীর শরীরে পরিবর্তন আনে। এই পরিবর্তনটা অতি তাড়াতাড়ি বা অতি ধীরে ধীরে হতে পারে।
অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
এমবিবিএস এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি

http://www.sunagro.info/

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More