Saturday, July 9, 2011

চীন: পতিতাবৃত্তি, বাস্তবতা, ভণ্ডামি এবং মানব জীবন

যখন অনলাইন তথ্য মাধ্যম সমূহের পাতায়, অনলাইন টিভিতে, ব্যবসায়িক প্রচারপত্র, বিজ্ঞাপন চিত্রসমূহ এবং সমসাময়িক চীন এর জীবনযাত্রার সকল ভার্চুয়াল ক্ষেত্রেই নারীর যৌন আবেদন ( উদাহরণ স্বরূপ, নিচের উচ্চমানের যৌন আবেদন মূলক চিত্র ধারণ করা হয়েছে কিউকিউ এর নারী বিভাগ হতে) এর উপস্থিতি এবং পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, তখন সম্প্রতি চীনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ শহরে পতিতাবৃত্তি ও পর্ণগ্রাফিতে ধ্বস নেমেছে ।
সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০ বিশ্বকাপের সময়, প্রতিদিন সকল তথ্য মাধ্যমের পাতায় যৌনতাপূর্ণ ও অশ্লীল পোষাক পরিহিত নারীর ইঙ্গিতময় নতুন নতুন চিত্র স্থান পেত যেখানে ‘সুগন্ধি মাংস” ধরনের বর্ণনাও থাকত (香肉) এবং “যৌন আবেদনময়ী ফুটবল রমণীরা” (香肉)) যা নির্দেশ করে নারী যৌন উত্তেজনার উৎস) ।
বাস্তবিক মানব যৌনতা
অবশ্যই, নারী দেহ, নারী যৌনতা এবং মানবজাতির যৌনতা সাধারণ ভাবে বলতে গেলে নেতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করার কথা না। যৌনতা ও কামনা প্রদর্শন মানব স্বভাবের বহু পুরাতন লিপিবদ্ধ ইতিহাসের মতই একটা অংশ এবং চীন অবশ্যই প্রথম কোন দেশ বা সমাজ নয় যেখানে যৌনতা রয়েছে (এমনকি চীনের দীর্ঘ ইতিহাসে এটাই প্রথম নয় যে এমন একটা বিষয় আলোচিত হয়েছে)।
ইউরোপ, আমেরিকা, প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর প্রত্যেক সমাজেই তার নিজস্ব সংস্কৃতি, সমাজ ও ব্যক্তির মধ্যে ওতপ্রোতভাবে যৌনতা থাকার প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক। বিশেষ করে বিস্তৃত তথ্য মাধ্যমের সমসাময়িক ধারনার আলোকে এ প্রশ্ন সেই পুরাতন বিষয়কেই নতুনভাবে চালনা করছে।
পুরাতন পেশা
পতিতাবৃত্তি হলো পৃথিবীর “সবচেয়ে পুরাতন একটা পেশা”, যদিও এখনও অনেক দেশ ও আইন জীবন ধারনের এই পন্থাকে নিষিদ্ধ এবং হীনতা হিসেবেই দেখে।
পতিতাবৃত্তির নৈতিকতার তর্ক সীমাহীন এবং অবশেষে ব্যক্তিগত এবং বিষয়ভিত্তিক হলেও পতিতা/বেশ্যা দের চাহিদা অনস্বীকার্য এবং অবদমনীয়। স্বপ্ন এবং ইচ্ছা পুরণের নিমিত্ত হিসেবে যৌনকামনা চরিতার্থ ও উত্তেজনা প্রশমনের উৎস হিসাবে নারীর (এবং স্বল্প পরিমাণে পুরুষের) চাহিদা ছিল, আছে এবং সব সময় থাকবে।
যৌনতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, মালিকানা, সংস্কৃতি এবং সমাজ এর চরম কিছু জিজ্ঞাসা এই ক্ষেত্রেই বেশ আলোচনার সুযোগ পায়।
যৌন, যৌনতা, অর্থনীতি এবং অধিকার ভুক্ত
নারীর যৌনতা এবং দেহ কার অধীন? আদর্শগতভাবে বলা যেতে পারে কারও না, যদিও দৃঢ় বাস্তবতায় এর উত্তর হলো: সে যে সর্বোচ্চ শক্তির সহায়তায় তার দাবীর সমর্থন আদায়ের ক্ষমতা নিয়ে দাবী উত্থাপন করে-হয়তো সেটা কখনও বিনিময় মূল্যে কিংবা নারী অসম্মতি স্বত্তেও।
সেটা হতে পারে একটি পরিবার, একজন ছেলে বন্ধু, একজন স্বামী, একটি মডেলিং কিংবা বিজ্ঞাপন সংস্থা, সংগীত/সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি, ধর্ম, কোন দালাল অথবা কোন সরকার নিজেই, যে কেউ বা যে কোন কিছুই প্রায় সর্বদাই একজন নারী, তার দেহ, তার যৌনতা, প্রজনন, মন, সম্পর্কসমূহ এবং পছন্দের উপর আপন কর্তৃত্ব এবং/বা অধিকার দাবী করে- এবং প্রায় সর্বদাই তার (নারীর) একক শক্তি সামর্থ্যের থেকে বেশী শক্তির কেউ বা কিছু হয়ে থাকে।
অর্থনৈতিকভাবে, নারীর দেহ এবং নারীর যৌনতা এক মূল্যবান পণ্য। অর্থনৈতিক পণ্য হিসাবে নারীর এই অবমূল্যায়ন হ্রাস করতে কেউ পছন্দ করুক বা নাই করুক, দুনিয়ার প্রত্যেক সমাজেই এই ব্যবস্থা বাস্তবিক এবং নিত্য তাই তা কোন স্থানের, সমাজের এবং সংস্কৃতির উট, গরু, ভেড়া কিংবা ঘোড়াই হোক না কেনো অথবা অন্যদিকে ডলার, ইউরো, ইয়েন বা ইউয়ান এর চুক্তি।
থালাবাসন ধোয়ার সাবান থেকে গাড়ী, খুশকি নিবারক, বিয়ার সব কিছুই বিক্রয়ের জন্য পুরোমাত্রায় নারীর সৌন্দর্য এবং যৌনতাকে ব্যবহার করা হয়, এমনকি পারিবারিক জীবনে ও তাই। উপযুক্ত যৌনতা এবং সৌন্দর্যের অধিকারী নারীগণ কে তাদের ভাবমূর্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রির জন্য উপযোগী হিসাবে খুঁজে বের করা হয় ।
গাড়ী ও বিয়ার এবং খেলাধূলার জন্য ভিন্নতর যৌন আবেদন ও ভাবমূর্তি ব্যবহার করা হয় যা গৃহস্থালী পন্যের জন্য ব্যবহার থেকে ভিন্নতর, কিন্তু এ সবই একটা নির্দিষ্ট স্তরের বা ভিন্নতর যৌনতা ও শারীরিক আবেদনেরই সমষ্টি। প্রায় স্বগোত্রভোগীর মত নারীরা নিজেদের যৌন আবেদন তৈরীতে, নিজেকে উপস্থাপন ও গঠনে এবং বিক্রিতে নিজেরাই উৎসাহিত করে, নারীরা এটা করে অন্য পুরষ, প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তাদের নিজেদের আরও বেশী যৌন উত্তেজক ও দৈহিক আবেদনময়ী গঠনের করে তোলার নিমিত্তে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা হয় নারী, নারীর দেহ, নারীর ভাবমূর্তি এবং তাদের যৌন আবেদন দিয়ে বা এগুলোর ভেতর থেকে, এবং এখান থেকেই পতিতাবৃত্তির অপরাধজনিত বিষয় উত্থাপিত হয়: যদি ব্যবসা ও বাণিজ্যেও প্রসারে, ব্যবহারে এবং আর্থিক লাভের জন্য (এবং সরকার কর্তৃক শেষমেষ কর পক্রিয়ার মাধ্যমেও) নারীর যৌনতা গ্রহণ যোগ্য হয় …তবে কেনো বিছিন্নভাবে একা নারীর জন্য একই কাজ অপরাধ বলে পরিগণিত হবে? যদি কোন নারীর জন্য তার নিজ দেহ ব্যবহার ও প্রদর্শন করে আর্থিক লাভ অর্জন অপরাধ হবে, কোনো তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নারীর যৌনতাকে এমনকি কিশোরী মেয়েদেরকেও গোপনে যৌন উত্তেজক ও আপত্তিকর উপায়ে ব্যবহার ও প্রদর্শন করেই মোটা অংকের অর্থ উপার্জন অপরাধ হবে না?
নিষ্পেষণ, অপরাধ প্রবণতা এবং রোধ
সামষ্টিক সাফল্য অর্জনের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের জন্য সমাজ প্রকৃতপক্ষে সংস্থা নির্ভর। কোন সমাজে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চরম ব্যক্তিগত স্বাধীনতা প্রদান অথবা কোন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চরম স্বাধীনতা ভোগী ব্যক্তিদের নিয়ে কোন সমাজ সংগঠন স্বাভাবিকভাবেই অসম্ভব। তাহলে সমাজের কঠোর প্রচেষ্টাটি কি, স্বাধীনতা এবং বাধ্যবাধকতার মাঝে একটা ভাসমান সামঞ্জস্য রক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা প্রনয়ণ করাই সমাজের প্রচেষ্টা- অত্যধিক বাধ্যবাধকতা আবার ব্যক্তির মাঝে বন্দিত্ব ও অনৈতিকতার ভাব নিয়ে আসে, অধিক স্বাধীনতা ও সমাজকে সুষ্ঠুভাবে তার প্রয়োজনীয় কাজ করতে দেয় না।
যৌন এবং যৌনতা বিষয়েও এই একই ব্যাপার সত্য- অত্যধিক যৌন স্বাধীনতায় রোগ ছড়িয়ে পড়ে এবং এই রোগ অনিচ্ছুক ও অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের মাধ্যমে পিতামাতার মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। যাই হোক অন্যদিকে কঠোর দমন (বিশেষভাবে সাংস্কৃতিক বিস্তৃত স্তরে) মানসিক ও অনুভূতিগত ক্ষতিসাধন করে যা আবার শারীরিকভাবে, আত্মীয়তার সম্পর্কে বা আত্ম অপব্যবহারের এবং স্বভাবিক আনন্দে, প্রাকৃতিক মানবীয় সম্পর্কে ও যৌনতায় এমনকি সামাজিক ভাবে স্বীকৃত সম্পর্কের স্বাভাবিকতায় অংশগ্রহণে অক্ষমতার সূচনা ঘটায় এমনকি সামাজিকভাবে স্বীকৃত সম্পর্কের স্বাভাবিকতায়।
তাই, এটা একদিকে কৃত্রিম যৌনতা উদ্রেককারী, অর্থনৈতিক লাভের স্বপ্রণোদিত কর্মের উদ্রেক ও সাধের সাঁড়াশির মত চাপ এবং অন্যদিকে মানবীয় যৌন আচরণের সামাজিক নিষ্পেষণ (অনেক সময় ধর্মীয় ও সরকারী সংস্থা কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ করা হয় অথবা উৎসাহিত করা হয়) যা সমাজের ব্যক্তি পর্যায়ের সদস্যদের মানবতাকে যুক্ত করে এই সব মানসিক ও অনুভূতির সঞ্চারণ জনিত চরম সামঞ্জস্যপূর্ণ ফলাফল এর সাথে না জয়ী ব্যবস্থায় যা ভৌত বিশ্বে মানুষের নিজেদের মধ্যে অন্যদের সাথে সম্পর্কের সীমানায়।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More