Thursday, July 21, 2011

দি আর্ট অব সেক্সুয়াল এক্সটাসি-1


উন্নত যৌনতা এই স্বীকৃতি দেয় যে, আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে একটা প্রবল মেরুপ্রবণতা রয়েছে এবং তা আছে গোপন অবস্থায়। একজন পুরুষের প্রধান দিকটি হচ্ছে পুরুষ জাতীয় এবং তার অধীনে হচ্ছে নারী জাতীয়। একজন নারীর মধ্যে প্রধান হচ্ছে নারী জাতীয় ও গোপন হচ্ছে পুরুষ জাতীয় সত্তা। এই পরিপ্রেক্ষিত থেকে নারী ও পুরুষের মধ্যে একটা স্থায়ী ও সুখী বন্ধনের জন্য প্রয়োজন একটা সমঝোতা যার মাধ্যমে একটা ভারসাম্য অন্তরের আত্মীয়তা অবশ্যই গড়ে উঠতে হবে যেটা হবে নারী ও পুরুষের আত্মস্থিত পৌরুষ ও নারীত্বের প্রকৃতির সাথের মিলন। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে একটা ভেতরের পুরুষ মানুষ আছে যেটা একটা প্রাণবন্ত ও ক্রিয়াশীল গতির সাথে জড়িত, সেটা লক্ষ্যবস্তুকে নির্ধারণ করেও লক্ষ্যে পৌঁছায় এবং জিনিসকে সঠিকভাবে চালায়। এটাকেই টাওয়িস্টগণ আমাদের চরিত্রের ইয়াং আকৃতি বলে অভিহিত করে থাকেন। এটা হচ্ছে অচিন্তনীয়ভাবে সংযুক্ত একটি সত্তা এবং আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে একজন ভেতরের নারী-মানুষ আছে, যা একটা প্রাকৃতিক শক্তি, যার দ্বারা সব জিনিস ঘটে যায়, জীবনের লক্ষ্যবস্তু ঠিক করা ছাড়াই জীবন প্রবাহের সাথে চলতে থাকে, যার দ্বারা শিথিল ও আনন্দময় জীবন চলে।
এটাই যা তাকে টাওয়িস্টগণ  প্রকৃতির ইইন আকৃতি বলে অভিহিত করে থাকেন। আর এটা হচ্ছে- ধ্যানপরায়ণতা, স্বতঃস্ফূর্ততা ও সংক্রমিত হওয়ার সত্তা। একই ব্যক্তিত্বের মধ্যে একজন নারী ও একজন নরের শক্তি একসাথে থাকার ধারণটার একটা জৈবিক ভিত্তিমূল আছে। বৈজ্ঞানিকগণ এর সত্যতা স্বীকার করেছেন যে, প্রত্যেকটি নর ও নারীর প্রকৃতির মধ্যে কতগুলো পুরুষ ও নারী হরমোনের উপস্থিতি আছে আর সেটা হচ্ছে Essential bypolarity of nature বা প্রকৃতির দ্বিমেরুকরণতা হরমোন দেহের ও লিঙ্গের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের যৌনশক্তি বর্ধনে সাহায্য করে। তন্ত্রীয় ধারণানুযায়ী পুরুষ দিচ্ছে সম্ভাবনা তার মধ্যস্থিত নারী হরমোনের উপস্থিতির কারণে এবং তাদের নিয়ে নিজের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে একইভাবে নারীর মধ্যে পুরুষ হরমোনের উপস্থিতির কারণে নারীকে তার পৌরুষ জাহির করার বা পুরুষত্বের অভিজ্ঞতা প্রকাশের সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। এই জৈবিক সত্যতার নিজস্ব আত্মিক প্রতিরূপী আছে।
C. g. jung এই ধরনের ভিন্ন ভিন্ন অনেক লোকের মনের মধ্যে মেল ও ফিমেল হরমোনের ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। তিনি পুরুষের মধ্যে একটা স্ত্রী উপাদান দেখতে পেয়েছেন আর তার নাম দিয়েছেন Animal- এটা একটা ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ হচ্ছে Soul বা আত্মা। তিনি লক্ষ্য করেছেন যে, এই এনিমা প্রায় সব সময়ই অবচেতন, বেহুঁশ বা অজ্ঞান অবস্থায় থাকে। তিনি আরো ধারণা করেছেন যে, যেভাবেই হোক না কেন, পুরুষ মানুষের প্রায় বেশিরভাগ সৃষ্টিশীল কাজ তার এই এনিমা থেকেই উৎপত্তি লাভ করে, যেটা তার স্বপ্ন, তার লক্ষ্য, তার অন্তর্দৃষ্টি, অনুপ্রেরণা এবং স্বতঃস্ফূর্ত উপলব্ধি। একইভাবে Jung স্বতঃসিদ্ধভাবে ধরে নিয়েছেন যে, একটা পুরুষ আত্মা বা এনিমাস একজন নারীর মধ্যে অবস্থান করছে এবং তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন যে, স্ত্রী-পুরুষ উভয়ই এই বিপরীতমুখী মেরুকরণের উন্নতি দ্বারা উপকৃত হতে পারে।
অন্তর্নিহিত স্ত্রী ও পুরুষের একত্রীকরণ
যা  Jung কল্পনা করেছিলেন আজ তা সত্যে পরিণত হতে যাচ্ছে। নারী-পুরুষ উভয়ই একটা বড় ধরনের জাগরণের মাধ্যমে এই দুটো অন্তঃমেরুকে একত্রীকরণের জন্যে কঠোরভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এটা করার জন্য স্ত্রীকে সেই এনিমাস বা পুরুষ সত্তার কার্যকারিতাকে স্বীকৃতি দিতে হবে- যখন তিনি দৃঢ়তায়, উচ্চাশায়, বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত কঠোর চেষ্টায় এবং জিজ্ঞাসায় নিজেকে প্রকাশ করতে যান। তার ভেতরস্থ পুরুষকে আত্মস্থ বা একত্রীভূত করতে হলে তাকে তার পৌরুষ গুণাবলীকে নিয়ে অনুশীলন করতে হবে, যে গুণগুলো নারীর মধ্যে থাকাটাকে পরিবারের পুরুষকর্তা ও পুরুষশাসিত সমাজ দ্বারা অবদমিত হয়ে এসেছে। একইভাবে  পুরুষ মানুষকে তার ভেতরের নারীত্বের গুণাবলীকে জাগিয়ে তুলতে হবে। যেমন আদর-যত্ন নেয়া, সেবা শুশ্রূষা করা, ইন্দ্রিয় সুখ ত্যাগ এবং গ্রহণযোগ্যতা যেগুলো পূর্বেও অমানবিক বিবেচনা করে অবদমিত করা হয়েছে। একটা প্রেমময় বন্ধনের মাধ্যমে যখন এই স্ত্রীত্বের এবং পৌরুষের গুণাবলীকে উন্নত করা এবং বুঝতে পারা যায় তখন একই মানুষের মধ্যে দুটো মেরুর মিলন ঘটতে পারে। এটাই যাকে তন্তু মতে উৎফুল্লজনক জাগরণ মনে করা হয়। এটা চৈতন্যময় ধারণার একটা অবস্থা, আত্মোপলব্ধির অন্যতম অবস্থা যার দ্বারা উভয় লিঙ্গকেই (পুংলিঙ্গ ও স্ত্রী লিঙ্গ) একই অঙ্গে আলিঙ্গন দেয়া যায় এবং তারপরই ভেতরের দ্বৈধতা কাটিয়ে উঠে একটা একক সত্তায় পরিণত হওয়া যায়। এই অবস্থায় এসে আপনি এই বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারেন এটা শুনতে তো আশ্চর্য লাগে, কিন্তু আমি সেখানে পৌঁছাব কি করে? আনন্দের সাথে আমি একটা পথের নক্সা তৈরি করেছি এবং আপনার প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে নিজের ভেতরের পুরুষ ও ভেতরের নারী চরিত্রগুলোর ওপর আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটাকে ভালো করে উপলব্ধি করা বা ভালো করে চেনা।
দুটি মনোভাবের পার্থক্য
এখানে কয়েকটি উদাহরণ দেয়া হলো যখন একজন নারীর ভেতরস্থ পুরুষ মানুষটির জাগরণ ঘটেনি তখনকার তার মনোভাব, আর যখন তার মধ্যে দুটো মেরুই জাগ্রত হয়েছে তখনকার মনোভাবের পার্থক্য কি?
অজাগ্রত অবস্থায়
সে কখনোই ‘না’ বলে ফিরিয়ে দেয় না অথবা খুব কম ‘না’ বলে। সে হ্যাঁ বলতে বাধ্য হয়, কারণ সে ভয় করে যে, যদি সে না বলে তার প্রকৃত মনের অবস্থা ব্যক্তি করে তাহলে সে হয়তো পরিত্যক্ত হবে।
জাগ্রত অবস্থায়
সে যখন ইচ্ছা মনে করে তখন ‘না’ বলে দেয়ার ঝুঁকি নেয়। কারণ তখন সে নিজেকে সমমান দেয়। নিজের সীমাবদ্ধতা জানে এবং তাদেরকে প্রকাশ করতে ভয় পায় না।
অজাগ্রত অবস্থায়
সে ভালোবাসার সময় কখনো কখনো কৃত্রিম চরমপুলক দেখায়। এটা শুধু তার সঙ্গীর আত্মবিশ্বাস রক্ষা করার জন্য।
জাগ্রত অবস্থায়
সে তার সঙ্গীকে বলে যে সে এখনো শীর্ষপুলকে পৌঁছায়নি কেন? তার ব্যাখ্যা দেয় এবং সঙ্গীকে পরামর্শ দেয় যে, তারা যৌথভাবে কোনো পন্থায় তাদের আনন্দ বাড়াতে পারে।
অজাগ্রত অবস্থায়
সে একজন খুবসুরত রাজপুত্রের কল্পনা করে অথবা একজন বাকপটু কবির স্বপ্ন দেখে, যিনি তার জীবনটাকে হাতের মুঠোয় তুলে নেবেন। উভয়ের জন্য চিন্তা করবেন এবং দরকারি সব সিদ্ধান্ত নিজেই গ্রহণ করবেন।
জাগ্রত অবস্থায়
সে নিজেকে একজন সুন্দরী রাজকন্যা হিসেবে দেখে, যেন একজন সুন্দর রাজপুত্রের পাশাপাশি ঘোড়ায় চড়ে ভ্রমণ করছে। নিজের জীবন নিজের হাতেই ধরে আছে। তার কাছে জীবনটা হচ্ছে সমান দুজন সঙ্গীর মধ্যের সহসৃষ্টি। এখানে আরো কয়েকটি সদৃশ্য উদাহরণ যেখানে একজন পুরুষ তার ভেতরের নারীর সাথে বিপরীত মনোভাব পোষণ করেন।
অজাগ্রত অবস্থায়
ভালোবাসার সময় সে কোনো কথা বলে না। নারীটি যদি কিছু বলতে চায়, সে উত্তর করে ‘চুপ থাকো’ তুমি জিনিসটাকে খারাপ করে দিচ্ছ।
অধ্যাপক ডাঃ এ এইচ মোহামমদ ফিরোজ
এমবিবিএস এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি
E-mail : professorfiroz@yahoo.com
ফোন ঃ ০১৭১১-৫২১২২২, ০১৯৯-৫২১২২২

http://www.sunagro.info/

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More