Friday, June 17, 2011

ধর্মীয় পতিতাবৃত্তি

ধর্মীয় বা পবিত্র পতিতাবৃত্তি (ইংরেজি ভাষায়: Sacred prostitution) হচ্ছে এক ধরনের সামাজিক রীতি যেখানে একজন মানুষ যৌন সংগম করে নিজ পতি বা পত্নী ব্যতীত অন্য কারও সাথে পবিত্র বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে। এ ধরনের কাজে যে ব্যাক্তি জড়িত থাকেন তাকে বলে দেবদাসী বা ধর্মীয় পতিতা

প্রাচীন প্রাচ্য দেশে

ধর্মীয় পতিতাবৃত্তি প্রাচীন প্রাচ্য দেশে বেশি মাত্রায় হত। প্রাচীন মেসোপটেমিয়ানরা ধর্মীয় যৌনতার প্রতিটি সু্যোগই কাজে লাগাত। গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডটাস বলেনঃ ব্যাবলীয়ানদের সবচেয়ে খারাপ রীতি ছিল জীবনে একবার হলেও প্রত্যেক মহিলাকে বাধ্য করা আফ্রিদিতি মন্দিরে যেতে, যেখানে তাকে একজন অপরিচিত ব্যাক্তির সাথে যৌন কর্মে লিপ্ত হতে হত। যেসব মহিলারা ধনী ও গর্বিত ছিলেন তারা মিলিত হতে চাইতেন না। তাদের তখন দড়ি দিয়ে বেঁধে আনা হত মন্দিরে। প্রচুর অনুগামী লোক ভিড় করত তখন। এভাবে বিপুল সংখ্যক মহিলাকে আনা হত। মহিলারা বাড়িতে ফিরে যেতে পারত না যৌন কর্মে লিপ্ত হওয়ার আগে। অপরিচিত কোন লোককে অবশ্যই টাকা দিতে হত বন্দিনী মহিলার আঁচলে এবং তাকে আহবান করতে হত মাইলিত্তা দেবীর নামে। তাদের মন্দিরের বাইরে মিলিত হতে হত। টাকার পরিমাণ যাই হোক না কেন তা নিতে আস্বীকার করা পাপ। এভাবে সুন্দরী মহিলারা সহজেই মুক্তি পেত অল্প দিনে। অসুন্দরীদের থাকতে হত দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত কোন লোকের সাথে মিলনের আগ পর্যন্ত। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৪ বছর আগে গ্রিসে জেনোফন নামের একজন অলিম্পিক বিজয়ী দেবীর মন্দিরে ১০০ জনের মতো তরুণীকে উপহার হিসেবে দান করে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ। করিন্থ নামক ঐ শহরে দেবী আফ্রিদিতির মন্দির ছিল। রোমান যুগে ঐ মন্দিরে প্রায় হাজারের উপর দেবদাসী ছিল।



আধুনিক পশ্চিমা জগতে

১৯৭০ -এর দশকে ও ১৯৮০ -এর দশকের শুরুতে ধর্মীয় পতিতাবৃত্তি ছিল নতুন লোক জোগানোর হাতিয়ার। কিছু ধর্মের লোকেরা নিজেদের লোক বাড়াতে এ কাজ শুরু করে। চিল্ড্রেন অব গড গোষ্ঠী এদের মধ্যে অন্যতম। তবে এইডসরোগের প্রাদুর্ভাব তাদের কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ভারতে ধর্মীয় পতিতাবৃত্তি

দেবদাসী প্রথার চর্চা ভারতে বেশি ছিল, যেখানে গ্রাম থেকে ছোট মেয়েদের ধরে এনে ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী বিয়ে দেয়া হত দেবতার সাথে বা মন্দিরের সাথে এবং তাকে সেখানেই থাকতে হত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অভিযোগ করে যে এভাবে উচ্চস্তরের হিন্দুরা দেবদাসীদের সাথে যৌন কর্ম করত জোর করে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সরকার আইন করে দেবদাসী প্রথা নিষিদ্ধ করেছে। এসব আইনের মধ্যে বোম্বে দেবদাসী আইন ১৯৩৪, দেবদাসী মাদ্রাজ আইন ১৯৪৭, কর্ণাটক দেবদাসী আইন ১৯৮২, অন্ধ্রপ্রদেশ দেবদাসী আইন ১৯৮৮ অন্যতম।

খ্রিস্টান সাধুদের বাধ্য করা

মাঝে মাঝে খ্রিস্টান সাধুদের বাধ্য করা হত ধর্মীয় পতিতাবৃত্তিতে। থিওদরা ও ডিদাইমুস এবং আন্তনিয়া ও আলেক্সজান্ডার নামক দু’জোড়া সাধুর ভাষ্যমতে একজন খ্রিস্টান কুমারীকে পাঠানো হচ্ছিল পতিতালয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। পথে একজন দয়ালু মানুষ তার সন্মান রক্ষার্থে শহীদ হন ঐ কুমারীর সাথেই।

রিভিশনিস্টদের দৃষ্টিতে

অনেক রিভিশনিস্ট যেমন রবার্ট এ ওডেন, স্টিফেন লীন বাডিন ও অন্যান্যরা প্রশ্ন তোলেন যে মন্দিরের লাভের উদ্দেশ্যে নর-নারীর পতিতাবৃত্তি কতটুকু বিশ্বাস যোগ্য। যাইহোক, সবাই অবশ্য এই ধারণার সাথে একমত নন।


সূত্র: উইকিপিডিয়া

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More