Saturday, June 18, 2011

যৌনতার ইতিহাস আর কিছু যৌনসর্ম্পকের ভিডিও বিষয়ক আলোচনা..


সূচনা:
যদিও পূণরুৎপাদনের বিষয়টা একেবারেই সামাজিক একটা দৃষ্টিভঙ্গীতেই শুরু হইছিলো বইলা সমাজবিজ্ঞানীরা দাবী করেন। যৌন সম্পর্কের বিষয়টা কিন্তু তাদের কাছেই একদম ব্যক্তিগত একটা বিষয়। যৌন সম্পর্কের সাথে সবসময় প্রজনণ প্রাসঙ্গিক না বইলা এইখানে ব্যক্তিগত আনন্দ কিম্বা পরিতৃপ্তির আকাঙ্খাও যূক্ত থাকে। আমার জানা নাই পোশাক প্রথার শুরু হইলো কবে, মানুষের শরীর ঢাকার প্রয়োজন কেনো তৈরী হইলো। ইসলাম ধর্মে পর্দা প্রথার শুরু কেমনে শুরু হইলো তার একটা ব্যখ্যাই কেবল আমার শোনা আছে। হযরত মুহাম্মদ একবার তার সাহাবাদের দৃষ্টিভঙ্গী আর আলোচনায় বিবি আয়েশার শারীরবৃত্তীয় প্রসঙ্গ শুনতে পাইয়া একটু বিব্রত হইলেন। আর সেই রাইতেই নাজিল হইলো পর্দা প্রথা বিষয়ক বিধান। আমি জানি না এই তাফসীর কদ্দূর সত্য, কিন্তু ইসলাম ধর্মে যৌনতার পরিধী ছোট কইরা নিয়া আসনের কারণ ছিলো পারিবারিক উপলব্ধি। ঠিক যৌনতার পরিধী ছোট কইরা আনা যদিও হয় নাই, যৌনতার সাথে নৈতিকতার বিভিন্ন শর্ত আর দৃষ্টিভঙ্গীরে যূক্ত কইরা দেয়া হইছিলো ইসলামে।
সেমেটিক ধর্মগুলিতে যৌনতারে সবসময়েই একটা নৈতিক আওতার মধ্যে নিয়া আসনের তাগীদ ছিলো। এই সকল নৈতিকতার মূল অ্যাপ্রোচ সভ্যতার সাথে সাথে পরিবর্ধিত হইছে কিছুক্ষেত্রে পাল্টাইছে। কিন্তু এই সকল অ্যাপ্রোচ মূলতঃ সামাজিক প্রসঙ্গ হইছে। যৌনতার সংজ্ঞা কিম্বা এর সীমা পরিসীমা নির্ধারনের ক্ষেত্রে মানুষ আর মানুষের ধর্মসমূহ সামাজিক নৈতিকতারেই গুরুত্ব দিছে। অথচ যৌনতা যে একেবারেই ব্যক্তিগত বিষয়, যেই কারনে তার লুকোছাপা চলে। ব্যক্তিগত বিষয়ের উপর সামাজিক পুলিশিং বা নজর রাখার পদ্ধতিটা কি সেইটা নিয়া ইতিহাসে অল্পস্বল্প হইলেও তর্ক জারী ছিলো নিয়তঃ'ই। আবার ধর্মগুলিতে নারীর অবস্থান অধঃস্তন হওয়াতে যৌনতায় পুরুষের ভূমিকা সবসময়েই প্রধান থাকছে, যার প্রভাব এইসব নৈতিকতা আরোপের পদ্ধতিতেও পড়ছে।
যৌনতায় নারী আর পুরুষের শারিরীক পারফরম্যান্স কিভাবে নির্ধারিত হয় তার কোনো নৈতিক মানদণ্ড যদিও কখনো তৈরী হয় নাই। তবে সভ্যতা আর ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় কিছু বিষয়রে নীতিমালার মধ্যে নিয়া আসা হয়, যেমন শিশু আর সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণরে সামাজিকভাবে নৈতিকতার সঙ্কটের মধ্যে ফালাইয়া দেয়া হয় অধিকাংশ সমাজেই। তবে পুরুষ যেহেতু সবসময় এর মানদণ্ড তৈরী করার অধিকার পাইছে সকল পর্যায়ে, তাই নারীর ভূমিকা যৌনতায় বেশিরভাগ সময় হইছে উত্তেজনা তৈরীর হাতিয়ার, আর পুরুষের বাসনা মিটানের অবলম্বন হিসাবে। পশ্চিমে এর ধরণ অবশ্য অনেক্ষেত্রে পাল্টাইছে কারণ যৌনতায়ও বোরডোম তৈরী হয়(!)। পরিবেশের সাথে সংগ্রামের ধরনের কারনে পশ্চিমে অবশ্য যৌনতার ধরনে অনেকসময় পরিবর্তন আসছে। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণে মাত্রাগত পরিমাণ কেবল যৌনতায় না সম্পর্কের অন্য সকল ধরনেও সেমেটিক নৈতিকতার সাথে অল্পস্বল্প বিরোধ সূচীত হইছে এই এলাকায়।
আর সকল অধিকারের মতোন যৌনতায়ও নারীর অধিকার সীমিত হইছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায়। ইসলামিক ব্যখ্যায় অবশ্য কিছু যৌক্তিক বা যূক্তির পরম্পরাগত ব্যখ্যা হাজিরের চেষ্টা হইছে কিছু ক্ষেত্রে, যেমন পরিবার প্রথার বা বংশের পরম্পরাতে পিতৃপরিচয় রক্ষার একটা তাগীদ সামাজিক নৈতিকতা হিসাবে তার আগেই পরিচিত হইছে গোত্র আর কৌম গুলির মধ্যে। নারীর যৌনতা এই কারনে একমূখীন রাখার একটা মূল্যবোধ প্রয়োজন আছে সমাজে। পুরুষের বহুগামীতারেও নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা ছিলো হযরত মুহাম্মদের নৈতিকতা আরোপের মধ্যে। নৈতিকতার এইরকম নিয়ন্ত্রণ পরবর্তীতে পরিবর্তীত না হইলেও প্রশ্নের সম্মুখীন হইছে পুরুষের বেলায়, কিন্তু নারীর বেলায় বিষয়টা সেই আদিম পর্যায়েই রইছে।
পরবর্তী কাল:
যদিও ফ্রয়েড আইসা এইসব নৈতিকতার চর্চা নিয়া বা এইসব চর্চার মনস্তত্ত্বগত ব্যখ্যারে ভালোই প্রশ্নের মুখোমুখি করেন। নারী আর পুরুষের সম্পর্ক নির্ভর সাইকিতে আসলে যৌনতা কিভাবে বিরাজ করে আর সমাজ সেইটারে কিভাবে দেখতে চায়, এই দুইয়ের মাঝে যে দ্বান্দ্বিক বিরোধ বা কন্ট্রাডিকশন তৈরী হইয়া গেছে কালের প্রবাহে তার একটা বৈপ্লবিক অনুধাবন আমরা দেখি ফ্রয়েডিয়ান আলোচনায়। মূলতঃ ফ্রয়েডের বেলা স্বপ্নে স্বপ্নে গেলেও যৌনতা সেইখানে মাথায় আর চিন্তায়ও ভালোই ছিলো আসলে। সে ইতিহাস আর মিথোলজী থেইকা যৌনতার লেজ ধইরা টান দিয়া দেখায় বহুকিছু। নারী যে পুরুষতন্ত্রের নৈতিক ধামাচাপার ভিতরে থাইকাও অন্যরকম ভাবনারে প্রশ্রয় দেয় সেইটা তারে আলোচনা করতে দেখি আমরা।
তবে ফ্রয়েডিয়ান আলোচনার পরে পুরুষ যৌনতা নিয়া তার দৃষ্টিভঙ্গীতে একটা সমতা আনয়নের চেষ্টা শুরু করে। এর পেছনে হয়তো যৌনতায় শীর্ষানুভূতি পাওনের একটা গোপন ইচ্ছা তাদের ভিতরেও ছিলো। পুরুষ তার নিজের রুচীর উপর গইড়া উঠা সমাজরেতো হুমকীর সম্মুখিন করতে পারে না, নারীর আকাঙ্খা যদি একসময় তার জন্য হুমকীর বিষয় হইয়া দাঁড়ায়! সভ্যতার এই পর্যায়ে নারী তাই একটু ভিন্ন রূপে আসে...যৌনতায় নারী আসে প্রধান কল্পচিত্র হিসাবেই। নারীদেহের বক্রতা ছাড়া ঠিক যৌনতা জমেনা। নারীর অজান্তেই তারে আরো্ বেশি অধিনস্ত করার পরিকল্পণা কইরা ফেলে পুরুষেরা। নারীরে তারা যৌন প্রক্রিয়ায় নায়িকাই বানায়, এই নায়িকার ভূমিকা যৌনতার সময় বিশাল থাকে। সে যৌন প্রক্রিয়ার সময় অনেক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা পায়। এই ক্ষমতা হয়তো নারীরে আবদ্ধ রাখতে বা তার আনুগত্যরে নিশ্চিত করবো এইরম সম্ভাবনা থেইকাই পুরুষের এতোটা দরদ!

মূল প্রসঙ্গ:
যেই বিষয়ে আলোচনা করতে চাই সেইটা বেশ সেন্সিটিভ হওয়ার জন্য ভূমিকাটারে প্রাসঙ্গিক মনে হইলো। হয়তো পাঠকরে প্রস্তুত করতে চাইছি আলোচ্য প্রসঙ্গের উপস্থাপণরে গ্রহণযোগ্য করার জন্য। সম্প্রতি মিডিয়াতে পরপর একাধিক সেলিব্রিটি'র(লোকশ্রুতিতে আরো বেশি) যৌনতার ভিডিও মানুষের কম্যুনিকেশন মডিউলে ঘোরাফেরা করতে দেইখা আমি নিজে খানিকটা শংকিত হইছি। যৌন কর্মকাণ্ড আমার এই শংকার হেতু নয়। শরীরের চাহিদা বা মানসিক আকাঙ্খার বিস্তারে একজন নারী আর একজন পুরুষের শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হইলে আমি ব্যক্তিগতভাবে তাতে কোনো অপরাধ দেখি না। সামাজিক নৈতিকতার এই আরোপ কইরা দেওয়া আচরণরে আমি প্রশ্নবিদ্ধ করতে রাজী আছি যেকোনো সময়। একজন পুরুষ হিসাবে এইটা নতুন কোনো উপলব্ধি না, পশ্চিমা সমাজে এই নিক্তির উদ্ভব ঘটছে বহু আগেই। আমার শংকা তবে কোথায়!?
শুরুতে আরবান মানুষের মডেলাইজার হইয়া উঠাতে খানিকটা আরাম পাইলেও পরবর্তীতে শংকিত হই সেই মানুষের ম্যানিপ্যুলেটিভ আচরনে। যেই মানুষ সামাজিক নিক্তিতে ঠিক করছে যৌনতা হইলো ব্যক্তিগত বিষয় কারণ তার শারিরীক আনন্দ-সুখ প্রাপ্তি ঘটে যৌনতার সম্পর্কের সঠিক চর্চার মাধ্যমে। যেই আরবান মানুষ নারীরে যৌনপ্রক্রিয়ায় প্রোটাগনিস্ট বানাইছে। তারাই হঠাৎ এইসব ভিডিও প্রচার কইরা বিষয়টারে সার্বজনীন বানাইয়া ফেলতেছে। তারাই ভিডিওতে নারী সেলিব্রিটির পারফরম্যান্সগত ভঙ্গীমারে নিয়া হাসিঠাট্টা করতেছে। এই আচরণটা যদি একান্ত'ই বাঙালিগো হইতো তাইলে হয়তো আমার শংকা কিছুটা কম হইতো, কারণ বাংলাদেশের মানুষ আসলে এখনো তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের বাইরে চিন্তাপদ্ধতির কথা ভাবতেই পারে না। (ধর্ম নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিয়া কিভাবে তা এই আলোচনার শুরুর দিকেই আমি উল্লেখ করছি।) কিন্তু উদারতার ধারক-বাহক পশ্চিমেও দেখি তাগো উঠতি তারকা লিন্ডসে লোহানের ন্যুড ভিডিও নিয়া পত্রপত্রিকায় বেশ উত্তেজনা বিরাজ করে। সামাজিক মানসিকতার গঠনের জন্য লোহানের তেমন কিছু আসে যায় না হয়তো। সুপারম্যানের পরবর্তী ভার্সনে তার নায়িকা হইয়া উঠার সম্ভাবনা তাতে খুব একটা হ্যাম্পার্ড হয় না হয়তো। কিন্তু আমাগো প্রভা কিম্বা চৈতির তো ঘর থেইকা বের হওয়াটাই বিপজ্জনক হইয়া উঠে।
ভিডিও ধারণটারেও আমার তেমন গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য লাগে না এই বিষয়ে। বরং ভিডিও'র প্রচারে যেই অসদুদ্দেশ্য থাকে সেইটা আমার চোখে লাগে। একজন মডেলাইজার পুরুষ আসলে এই ভিডিও প্রচারের মধ্য দিয়া একজন তারকার বা আরো সুনির্দিষ্ট কইরা বললে একজন উঠতি তারকার জীবনরে হুমকীর সম্মুখিন কইরা তার পুরুষালি দাপটের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সমাজের সকল পুরুষ আর পুরুষালি চেতনার নারীরাও এই ভিডিও দেইখা দুই ধরনের স্বার্থ সিদ্ধি করে, ১. একটা যৌন প্রক্রিয়া তার উত্তেজনা নিজের শরীরে উত্তেজনা আনে। যেহেতু সে ফ্যান্টাসাইজ করতে ভালোবাসে। ২. একজন নারী সেলিব্রিটি'র এই পতনোম্মুখ প্রয়াসে সামাজিক পৌরুষ জয়যূক্ত হয়। এই ধরনের যৌনপ্রয়াস তো এই সমাজে হরহামেশাই ঘটে। সামাজিক নৈতিকতারে বুড়া আঙ্গুল দেখানোর এই ঔদ্ধত্য আমাগো সমাজেও বহু আগেই বিস্তৃত হইছে। শরীর তার চাহিদার রাজনীতি দিয়া এই পরিস্থিতি তৈরীতে উদ্যোগী হইছে। সামাজিক নীতিমালার বাইরেও তাই নারী-পুরুষের শারিরীক সম্পর্কের ধরনে ভিন্ন ভাষা প্রয়োগ হয়।
কিন্তু ভিডিও প্রচারণার বিষয়টা আসলেই অ্যালার্মিং লাগে। পুরুষের পৌরুষ যখন এমন নোংড়া প্রকাশে তার চেহারা দেখায় তখন মনে হয় আদিম প্রবণতাগুলিই অনেক ভালো ছিলো, কি লাভ হইছে সভ্যতার এতোদূর পরিভ্রমণে!? এই সব বিচ্ছিন্ন ভিডিও আসলে শোবিজ সম্পর্কে মানুষের ভিন্ন মূল্যবোধ তৈরী করতেছে। যার ফল খুবেকটা ভালো হওয়ার কথা না...

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More