Monday, June 27, 2011

শারীরিক সমস্যা জয়ের কৌশল

শারীরিক সমস্যা জয়ের কৌশলমানসিক কারণে সৃষ্ট সমস্যার ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী যে কোন একজনকে সহানুভূতিশীল হতে হবে। শুধু পুরুষের নয়, মানসিক কারণে স্ত্রীরও নানা সমস্যা থাকতে পারে।দীর্ঘদিন ধরে হেলপ লাইন কলামে নারী-পুরুষ তথা তরুণ-তরুণীদের নানা সমস্যা নিয়ে লিখে আসছি। কতটা এই কলামটি কাজে লেগেছে তার হিসেব করা কঠিন। তবে একথাটি বলতে পারি অসংখ্য তরুণ পাঠক তৈরি হয়েছে এ ধরনের লেখনীর। এই কলামটি কিছুদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে নতুন রূপে হেলপ লাইন কলামটি অব্যাহত থাকবে।

আজও দুটি কেস হিস্ট্রি দিয়ে লেখাটি শুরু করতে চাই। দুটি কেস হিষ্ট্রিই গত সপ্তাহের।

কেস হিস্ট্রি একঃ যুবকের বয়স ২৪/২৫ এর বেশি হবে না। বিয়ে করেছেন। বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই স্ত্রীর পক্ষথেকে সম্পর্ক ছেদ করার সিদ্ধান্ত। ছেলের অভিভাবক এবং মেয়ের অভিভাবক দু’জনেই আমার চেম্বারে। বিচারকের আসনে আমি। রায় দিতে হবে। আর রায়টি হচ্ছে ছেলেটি শারিরীক ভাবে সুস্থও সক্ষম কিনা। আমার সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত ছেলে-মেয়ে আলাদা থাকবে। যথারীতি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসতে বলি। নির্দিষ্ট দিনে দু’পক্ষেরই অভিভাবক আসেন। রিপোর্টে দেখা গেলো যুবকটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বিন্দুমাত্রও শারিরীক সমস্যা নেই। সমস্যার একশত ভাগ কারণ ভীতি। এটাকে সেক্সোলজির ভাষায় বলা হয় পারফরম্যান্স এ্যাংজাইটি বা ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ। এরপর উভয় পক্ষের অভিভাবকগণ নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। পরবর্তীতে ছেলে মেয়েকে আসতে বলি। শুধুমাত্র কাউন্সিলিং করলেই এ ধরনের সমস্যার সমাধান হতে পারে।

কেস হিস্ট্রি দুইঃ স্বামী-স্ত্রী দুজনেই থাকেন দু’জায়গাতে। স্বামী শহরে আর স্ত্রী গ্রামে। বিবাহের বয়স বছর খানেক। হঠাৎ স্বামীর ইনফেকশন দেখা দিলো। যথারীতি পরস্পর পরস্পরকে সন্দেহ করতে শুরু করলেন। এখানেও বিচারকের আসনে আমি। ছেলেটির যৌন রোগের প্রায় সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দিলাম। রিপোর্ট একেবারেই নরমাল। যে সমস্যাটি মনে হলো তাকে বিশেষজ্ঞদের ভাষায় বলা হয় এন জি ইউ বা নন গনোকককাল ইউেিরথ্রাইটিস। উপসর্গ সবই যৌন রোগের মত। তবে আসলে এটা কোন যৌন রোগ নয়। ইউরেথ্রা বা মূত্রনালীর এক ধরণের প্রদাহ। সামান্য চিকিৎসায় এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায়।

উপরের দু’টি সমস্যার সন্দেহ ও ভুল বুঝাবুঝির নিরসন না ঘটলে এ দুটি সংসারে যে কতটা অশনিসংকেত দেখা দিতে পারতো তা বর্ণনা করা যাবে না। শুধুমাত্র সামান্য চিকিৎসা ও মামুলি কাউন্সিলিং-এ এ ধরনের হাজারো অনাকাঙিক্ষত সমস্যা দূর করা যায়।

তবে আর একটা কথা মনে রাখা দরকার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অজ্ঞতার কারণে নানা ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ ধরনের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করা উচিত। পারিবারিক বা অভিভাবক পর্যায়ে আলোচনা না করাই ভালো। প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট একজন ডাক্তারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিৎ। কারণ এ ধরনের সমস্যার শতকরা ৯০/৯৫ ভাগই মানসিক। কোন প্রকার চিকিৎসা ছাড়াই স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সমঝোতাও সামান্য কাউন্সিলিং-এ সুফল পাওয়া যায়। মাত্র ৫ থেকে ১০ ভাগ ক্ষেত্রে কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে। তাও যথাযথ চিকিৎসায় ভালো হয়। মাত্র শতকরা ১ থেকে ২ ভাগ স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যা জটিলতর থাকে। এক্ষেত্রে সার্জিক্যাল ইন্টারভেনশন প্রয়োজন হতে পারে। তাই কোনভাবেই শারীরিক সমস্যা অনুভূত হলে নেগিটিভ চিন্তা না করাই ভালো। আর নববিবাহিতাদের প্রাথমিক পর্যায়ে নানা ভীতি থাকতে পারে। এ ধরনের ভীতি কখনও স্থায়ী হয় না। তাই যে কোন ধরনের সমস্যার যৌক্তিকতা বিবেচনায় এনে অগ্রসর হওয়া উচিত। কোনভাবেই অজ্ঞতার কারণে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী নিজেদের পরস্পরের সমঝোতার ভিত্তিতে সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করা উচিত আগে। নিজেরা সমস্যার সমাধান করতে না পালে পরবর্তীতে পরিবারকে জানানো উচিত। এছাড়া স্বামী যদি বুঝতে পারেন তার কোনা না কোন শারীরিক সমস্যা আছে তাহলে প্রথমে স্ত্রী বা পার্টনারের সঙ্গে আলোচনা না করেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। চিকিৎসক যদি মনে করেন স্বামী-স্ত্রী উভয়ের কাউন্সিলিং দরকার তখনই বিষয়টি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হওয়া ভালো। মানসিক কারণে সৃষ্ট সমস্যার ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী যে কোন একজনকে সহানুভূতিশীল হতে হবে। শুধু পুরুষের নয়, মানসিক কারণে স্ত্রীরও নানা সমস্যা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে পুরুষের মত মহিলাদের চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে।

ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, যৌন সমস্যা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
বাংলাদেশ লেজার স্কিন সেন্টার

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More