Friday, October 21, 2011

বিকৃত যৌনতায় মুখে আলসার

যৌনতা মানুষের আদি সহজাত প্রবৃত্তিগুলোর অন্যতম। বিকৃত যৌনতায় মুখ, ঠোঁট, জিহ্বা, যৌনাঙ্গ এবং মলদ্বার ব্যবহƒত হচ্ছে। বিকৃত যৌনতার কারণে মুখে আলসার থেকে শুরু করে শরীরে বিভিন্ন জটিল রোগের বিস্তার লাভ করেছে। মুখের আলসারের চিকিৎসায় ওরোজেনিটাল সেক্স সত্যিই বড় এক চ্যালেঞ্জ। ওরাল সেক্সের ক্ষেত্রে অসাবধানতা এবং অজ্ঞতার জন্য মুখের জটিল রোগ থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিকৃত যৌনতায় কেউ যদি অভ্যস্ত থাকে তা হলে চিকিৎসককে বিষয়টি না জানালে আপনার মুখের আলসারের যথার্থ চিকিৎসা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সব চেয়ে ভালো হয় বিকৃত যৌনাচার পরিহার করে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হওয়া।
ওরাল সেক্সের মাধ্যমে যৌনসংক্রমিত রোগ (ঝঞউ) বিস্তার লাভ করে। সব চেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করে হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস। এ ভাইরাস টাইপ-১ সাধারণত ঠোঁটকে আক্রান্ত করে, যা কোল্ডসোর নামে পরিচিত। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের মাধ্যমে ফ্যারিনজাইটিস, গলাব্যথাসহ আলসার হতে পারে। আপনার ঠোঁটে যদি কোল্ডসোর থাকে তা হলে আপনার সঙ্গীকে ঠোঁটে চুমু দেয়া থেকে বিরত থাকুন এবং ওরাল সেক্সের কথা তো এক্ষেত্রে চিন্তাই করা যাবে না। ওরাল সেক্সে অংশগ্রহণকারী একজন যদি অন্যজনের সংক্রমণজনিত খোলা আলসারের সংস্পর্শে আসে তা হলে সিফিলিসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এভাবে সিফিলিসজনিত জিহ্বার আলসার দেখা দিতে পারে। ওরাল সেক্সে অংশগ্রহণকারী দু’জনের একজনের যদি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস থাকে তা হলে অন্যজনের জন্য তা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। ভাইরাস জেনিটাল ওয়ার্টস বা গোটার সৃষ্টি করে থাকে। ওরাল সেক্সের মাধ্যমে একজন যদি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সংক্রমিত অবস্থায় থাকে তা হলে অন্যজনের দেহে তা সংক্রমিত হতে পারে এবং মুখের পাশে বা ভেতরে ওয়ার্টস বা গোটা অর্থাৎ মুখের ভেতরে ভাইরাসের গোটা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওরাল সেক্সের অভ্যাসের কথা ডাক্তারকে রোগী অবগত না করলে বা লুকিয়ে গেলে চিকিৎসা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন যদি ওরাল সেক্স চলতে থাকে তা হলে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
ওরো অ্যানাল সেক্স অর্থাৎ মুখ ও পায়ু পথের যৌনতায় সালমোনিলা, শিগেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে। এর মাধ্যমে মুখে আলসার ছাড়া পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়া হতে পারে। হেপাটাইটিস ‘এ’ ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমে জন্ডিস ও পেটে ব্যথা হতে পারে। ভাগ্য খারাপ হলে ওরো অ্যানাল সেক্সের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ‘এ’ ভাইরাস বিস্তার লাভ করে। ওরাল সেক্স করার সময় যদি রক্ত বের হয় আর সঙ্গীর যদি হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস থাকে তা হলে তা সংক্রমিত হতে পারে। এইডস রোগের ক্ষেত্রেও রক্ত সঞ্চালিত না হলে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে বিস্তার লাভের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ‘বি’ ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিভিন্ন প্যারাসাইট ওরো অ্যানাল সেক্সের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। তাই মুখের আলসার প্রতিরোধে ওরাল সেক্স পরিহার করা উচিত।
ডা. মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
যুগান্তর

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

নারী পুরুষের কামলিলা দুনিয়া

বাৎসায়ন কামসূত্র

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More